সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের সুবাদে কাঠমান্ডুতে অবস্থানরত শীর্ষ নেতারা একে অপরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এ ধরনের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ঝালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বৈঠকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত সীমান্ত চুক্তি কার্যকর করার ব্যাপারে তার দেশের আগ্রহের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। বলেছেন, সীমান্ত চুক্তি লোকসভায় অনুমোদন পেতে যাচ্ছে। তার দেশের যেসব দল চুক্তির বিরোধিতা করছিল তাদের ঐকমত্যে আনা সম্ভব হয়েছে। তিস্তাচুক্তি সম্পাদনে আগ্রহের কথা জানিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজি করানোর চেষ্টা চলছে। মমতাকে নিয়ে বাংলাদেশ সফরের আশাও ব্যক্ত করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। স্মর্তব্য, ভারতের বিদায়ী কংগ্রেস সরকার তিস্তার পানিবণ্টনে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির মুখে সে প্রস্তুতি থেমে যায়। সীমান্ত চুক্তির ব্যাপারে বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস একাট্টা হয়ে বিরোধিতা করে। ফলে কংগ্রেস সরকারকে অসহায়ভাবে পিছিয়ে আসতে হয়। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রতিশ্রুতি দেয় তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্কের নীতি অব্যাহত রাখবে। কাঠমান্ডুর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসকে স্বভাবতই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। ভারতের নতুন সরকার সব প্রতিবেশী সম্পর্ক ঘনিষ্ঠকরণকে তাদের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সমস্যার সমাধানকে যে কারণে তারা অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই দেশের সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির সম্ভাব্যতাও এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে উজ্জ্বল। এ ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের যে আপত্তি, তা নিরসনের চেষ্টা চলছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। দুই দেশের বন্ধুত্বকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এটিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবেই আখ্যায়িত করা যায়।