শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

সুন্দরবনের শ্বাসকষ্ট

শ্যালা নদীতে সাড়ে তিন লাখ লিটারেরও বেশি ফার্নেস অয়েল ভর্তি জাহাজডুবির পর এখন যে পরিস্থিতি আসন্ন তাকে অনেকে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের শ্বাসকষ্ট বলে অভিহিত করছেন। কারণ ওই বিষাক্ত তেল নদীপথে ৫০ কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়েছে। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় শ্যালা নদী ও ১৮টি খালের দুই পাড়ের উদ্ভিদ ও প্রাণিকুল মরতে শুরু করেছে। নদীর আশপাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে দেখা মিলছে না রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ ও অন্যান্য প্রাণীর। তারা সম্ভবত সুপেয় পানির অভাবে এবং তেল অপসারণে লিপ্ত অনেক ব্যক্তির আনাগোনায় অন্যত্র চলে গেছে। তারা কি নিরাপদ? না, নিশ্চিতভাবে তা বলা যাচ্ছে না। কারণ 'মারাত্দক ফল' ফলতে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস কিংবা কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। অভিযোগ উঠেছে, বনের ভিতর দিয়ে বাণিজ্যিক জাহাজ চলতে না দিলে এই বিপর্যয় ঘটত না। পরিবেশ আন্দোলনকারীরা বলছেন, সুন্দরবনে তেল দূষণে কী পরিণতি হতে পারে সে বিষয়ে ২০০২ সালে গবেষণা হয়েছিল এবং তাতে প্রতিকারের জন্য করণীয় নির্দেশ করা হয়েছিল। দুঃখের বিষয়, গবেষণা প্রতিবেদনটি বনবিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রচার করা হয়নি। তেল বিপর্যয় ঘটেছে ২ ডিসেম্বর। ঘটনার ১৬ দিন পর জানা গেল, সরকারি অনুরোধে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা শীঘ্রই আসছেন সুন্দরবন রক্ষায়। জাতিসংঘের অভ্যন্তরে লালফিতার দৌরাত্দ্য প্রথাগত বিষয়। তাই বলা যায়, তাদের বিশেষজ্ঞরা আসতে আসতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। বিপর্যয় রোধে সরকারি পদক্ষেপ যথাযথ নয় মর্মে সমালোচনা আছে। তা থাকবেই। আমাদের প্রশ্ন, পরিবেশ রক্ষায় 'নিবেদিতপ্রাণ' এনজিওরা নিষ্ক্রিয় কেন? তারা কেউই তো এগিয়ে এলো না। তারা যে পরিবেশ সুরক্ষার কাজে ব্যয়ের নামে বিদেশ থেকে কোটি কোটি (একটি এনজিও এনেছে ১০০ কোটি) টাকা আনে সে টাকা কোথায় যায়?

সর্বশেষ খবর