রবিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রপতির ভারত সফর

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভারত সফরকালে সে দেশের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক দুই বন্ধু দেশের সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দান করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকে ভারতীয় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে জানানো হয়েছে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের সময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে আশ্বস্ত করে বলা হয়, সীমান্ত ও তিস্তা চুক্তিসহ অমীমাংসিত সব সমস্যার দ্রুত সমাধানের কাজ চলছে। ভারতীয় লোকসভায় স্থলসীমান্ত চুক্তি পাস হওয়ার পর বাংলাদেশ সফরে যাবেন এমন ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি তার সফরকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ও ভারত প্রতিবেশী দেশ। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সমস্যা থাকতেই পারে। সুপ্রতিবেশীসুলভ মনোভাবকে অগ্রাধিকার দিয়ে এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে হবে। বলা হয় সব কিছু পাল্টানো গেলেও প্রতিবেশী পাল্টানো যায় না। সুখে-দুঃখে প্রতিবেশীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা ব্যক্তিজীবনে যেমন অবশ্যকর্তব্য, রাষ্ট্রীয় জীবনেও তা সমানভাবে প্রযোজ্য। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রতিবেশী অভিধার চেয়েও বেশি। মহান মুক্তিযুদ্ধে বন্ধুপ্রতিম ভারতীয় জনগণের ভূমিকা বাংলাদেশের মানুষকে কৃতজ্ঞতার ডোরে আবদ্ধ করেছে। দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর রক্ত বহু ক্ষেত্রে একাকার হয়েছে। রক্তের এই রাখিবন্ধন দুই প্রতিবেশী দেশের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বকে এগিয়ে নেওয়ারই তাগিদ দেয়। আশার কথা, নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার বিদায়ী কংগ্রেস সরকারের মতোই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাকে নিজেদের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। জনসংখ্যায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত ইতিমধ্যে বিশ্বের তৃতীয় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আরেক প্রতিবেশী চীনের এক নম্বর অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে উত্থানের পর ভারতের অগ্রযাত্রা বাংলাদেশের জন্যও এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছে। আমরা আশা করব, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ভারত সফর দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী মৈত্রীবন্ধন দৃঢ়করণে অবদান রাখবে। এ বন্ধুত্ব দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যার সমাধানেও তাগিদ সৃষ্টি করবে- আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

 

 

সর্বশেষ খবর