সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

নকল ভেজাল ওষুধ

সারা দেশে এখন নকল ভেজাল ওষুধের ছড়াছড়ি। কমিশন লাভের আশায় চিকিৎসকদের একাংশ ভুঁইফোড় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির মানহীন ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের জন্য লিখে দিচ্ছেন। দেশে ওষুধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত কোম্পানির সংখ্যা ২৭০-এর বেশি। এর মধ্যে সর্বাধিক ৪০টি কোম্পানি মানসম্মত ওষুধ তৈরি করলেও অন্যদের উৎপাদিত ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নকল ও মানহীন ওষুধ তৈরির সঙ্গে জড়িতদের খুঁটির জোর এতই বেশি যে, তাদের আইনের আওতায় আনাও কঠিন হয়ে পড়ে। রাজধানী ও নগর এলাকার চিকিৎসকরা তাদের ব্যবস্থাপত্রে মানসম্মত কোম্পানির ওষুধ দিলেও, মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলোর ভরসা হাতুড়ে চিকিৎসকরা। তাদের কারণে মফস্বল এলাকার বাজারগুলো মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলোর দখলে। বাংলাদেশের ওষুধ ইউরোপ-আমেরিকায় রপ্তানি হলেও এখন মানসম্মত ওষুধ কোম্পানির ওষুধ ব্যবহার করেও স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কোম্পানির ওষুধও অবাধে নকল করছে সুসংবদ্ধ একাধিক চক্র। এ নকল প্রক্রিয়ার হোতাদের পেছনে অসৎ রাজনীতিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ওষুধ প্রশাসনের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশ থাকায় তাদের আইনের আওতায় আনা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ফলে তারা প্রকাশ্যে তাদের জালিয়াতির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নকল ওষুধ তৈরির জন্য মাঝে-মধ্যে জালিয়াত চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হলেও তাদের আটকে রাখা যায় না। অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলিয়ে আবারও জড়িত হয় নকল-ভেজালের কাজে। সংসদীয় কমিটি কয়েক মাস আগে ৭৩টি ওষুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করলেও তাদের বিরুদ্ধে এখনো যুৎসই কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নকল ভেজালের পাশাপাশি ওষুধের বাজারে ছড়ি ঘোরাচ্ছে অধিক মূল্যের খড়গ। ওষুধের জন্য উদার বিজ্ঞাপন নীতি না থাকায় গুটিকয়েক কোম্পানি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ওষুধের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে নকল ভেজাল অন্যদিকে উচ্চমূল্যের দাপটে অসহায় হয়ে পড়ছে দেশের মানুষ। এ অবস্থার অবসান হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর