রবিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

হত্যা ও নাশকতা থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলানা মুহম্মদ আশরাফ আলী

ইসলাম সব ধরনের সন্ত্রাস ও নাশকতার বিরুদ্ধে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নকারীদের সঙ্গে ইসলামের দৃঢ়তম সম্পর্কও নেই। পবিত্র কোরআনের সূরা মায়েদার ৩৩ নম্বর আয়াতে অরাজকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তিদের জন্য ইহকাল ও পরকালের কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। যারা অকারণে হত্যাকাণ্ড ঘটায় তাদের বিষয়ে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করে সূরা আন্ নিসার ৯৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে, 'যে লোক ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো বিশ্বাসী মুমিনকে খুন করবে, তার পরিণাম হবে চিরকালীন জাহান্নামবাস। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষুব্ধ হন, তাকে অভিশাপ দেন এবং তার জন্য ভয়ঙ্কর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।'

সূরা শূআরার ৪২ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে- 'শুধু তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যারা মানুষের ওপর জুলুম এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।'

ইসলামে অকারণ হত্যাকাণ্ড ও হানাহানি কবিরা গুনাহ হিসেবে বিবেচিত। বোখারি, মুসলিম ও নাসায়ী শরিফের হাদিসে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, জঘন্য কবিরা গুনাহ হলো আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, কাউকে হত্যা করা এবং জাহান্নাম অনিবার্য হয় এমন মিথ্যা শপথ করা। নাসায়ী ও বায়হাকি শরিফে বর্ণিত আরেক হাদিসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কোনো মুমিনের হত্যাকাণ্ড আল্লাহর কাছে সারা দুনিয়া ধ্বংসের চেয়েও বেশি মারাত্মক। পৃথিবীতে প্রথম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় প্রথম মানব হজরত আদম (আ.)-এর পুত্র কাবিল দ্বারা।

যারা হত্যাকাণ্ড ঘটায় তারা মূলত কাবিলের নিন্দনীয় পথ অনুসরণ করে। বুখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিত হাদিসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- 'দুনিয়াতে যত অন্যায় হত্যাকাণ্ড ঘটবে তার একাংশ আদম (আ.)-এর প্রথম পুত্র পাবে। কেননা সেই সর্বপ্রথম মানুষ হত্যার প্রচলন করেছে।

হানাহানির ঘটনা সামাজিক ও জাতীয় ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সাধারণ মানুষের জন্য দুর্ভোগ বয়ে আনে। আমাদের সবারই উচিত সব ধরনের সন্ত্রাস ও হানাহানি থেকে দূরে থাকা। সমঝোতার মাধ্যমে বিরোধের অবসান ঘটানোরই শিক্ষা দেয় ইসলাম।

লেখক : খতিব, আল আমিন জামে মসজিদ, খুলনা।

 

 

সর্বশেষ খবর