মঙ্গলবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

নকল ভেজালের দৌরাত্ম্য

রাজধানীতে খাদ্যপণ্য কিনতে গিয়ে ক্রেতারা প্রতিনিয়তই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। মাছ তরকারি ফলমূলে ফরমালিনসহ নানা রাসায়নিক মেশানো অসৎ ব্যবসায়ীদের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘটা করে ফরমালিনমুক্ত বাজার ঘোষণা দিয়ে সমানে চলছে প্রতারণা। ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রথমে মালিবাগ বাজারকে ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। এর পর বাদামতলী, মোহাম্মদপুর টাউন হল সিটি করপোরেশন কাঁচাবাজার, কাপ্তানবাজার, গুলশান উত্তর কাঁচাবাজার, বনানী, নিউমার্কেট, শান্তিনগর, মহাখালী সিটি করপোরেশন মার্কেট, আজমপুর-উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর সমবায় সমিতি বাজার ও মিরপুর ১ নম্বর বাজারকে ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ও রাজধানীর বাজারগুলো ফরমালিনমুক্ত করতে উদ্যোগ নেয়। কিন্তু বাজারগুলোতে ফরমালিন মিশ্রিত মালামাল চিহ্নিত করার ফরমাল ডিহাইড্রেট মেশিন থাকলেও তার ব্যবহার নেই। ক্রেতাদের জীবনঘাতী ফরমালিন থেকে নিরাপদ রাখা নয়, বরং 'ফরমালিনমুক্ত বাজার' সাইনবোর্ডকে ব্যবহার করে তাদের আরও বেশি ফাঁদে ফেলানোর জন্য এসব সাইনবোর্ড ব্যবহৃত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়লেও নকল ভেজালকারী ডক্রুলাদের দৌরাত্ম্য কমানো সম্ভব হয়নি কর্তৃপক্ষীয় নজরদারির অভাবে। খাদ্যপণ্যে নকল ভেজাল বন্ধে দেশে আইন থাকলেও ভেজালকারীদের শায়েস্তা করা সম্ভব হচ্ছে না এর যথাযথ প্রয়োগের অভাবে। দেশের একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি গত বছর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, আমাদের দেশে যত আইন আছে ইংল্যান্ডেও তা নেই। কিন্তু ইংল্যান্ডের লোকজনের মধ্যে যে আইন মান্যতা আছে তা আমাদের মধ্যে নেই। নকল ভেজালবিরোধী পর্যাপ্ত আইন থাকলেও প্রয়োগের অভাবে মানুষের জীবন সংকটাপন্ন হচ্ছে। মানুষ খাবার খায় সুস্থ থাকার জন্য কিন্তু অর্থ ব্যয় করে যে খাদ্য কেনা হচ্ছে তা তাদের জীবনকেই হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা মনে করি ফরমালিনমুক্ত বাজারের নামে যারা ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া উচিত। ফরমালিনমুক্ত বাজার সাইনবোর্ডের আড়ালে যারা খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে তাদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বাজারের কর্তাব্যক্তিদেরও এ জন্য জবাবদিহিতার মধ্যে আনা উচিত। নকল ভেজাল বন্ধে সেটিই হতে পারে আরও বেশি কার্যকর পথ।

 

 

সর্বশেষ খবর