বুধবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

পরীক্ষার্থীদের কথা ভাবুন

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে গভীর উৎকণ্ঠায় ভুগছে দেশের প্রায় ১৫ লাখ পরীক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত হবে মাধ্যমিক পর্যায়ের এই গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেবেন। পরীক্ষা কেন্দ্রের চারপাশে ২০০ গজ পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। তবে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াত করতে হবে নিজ দায়িত্বে। ককটেল ও পেট্রলবোমার বিভীষিকায় দেশে যখন লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে, তখন এসএসসি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উৎকণ্ঠার বিষয়টি সহজেই অনুমেয়। কারণ হরতাল অবরোধে প্রতিদিনই যানবাহনে আগুন লাগানো হচ্ছে এবং মানুষ পুড়িয়ে জিঘাংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে। হরতাল-অবরোধ নিঃসন্দেহে প্রতিবাদ জানানোর কর্মসূচি এবং সংবিধানে এ ধরনের কর্মসূচি পালনে নাগরিকদের অধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে নাগরিকদের পথচলার অধিকারও অলঙ্ঘনীয়। অর্থাৎ কেউ হরতাল-অবরোধে একমত না হলে তাকে তা পালনে বাধ্য করা যাবে না। হরতাল-অবরোধপন্থিরা এটা জানা সত্ত্বেও কথায় কথায় বাস, ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহনে পেট্রলবোমা বা ককটেল ছুড়ছে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে সরকারের সঙ্গে দূরতম সম্পর্ক না থাকা সাধারণ মানুষকেও পুড়িয়ে মারছে। দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর স্বার্থে এসএসসি ও সমমানের পাবলিক পরীক্ষার সময় সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহার করার আবেদন করা হলেও তারা কর্ণপাত করেননি। অবরোধের মধ্যে ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে অনেকেই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরীক্ষার সময়ও অবরোধ অব্যাহত থাকলে এবং পরীক্ষার্থীদের পক্ষে সুস্থভাবে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে কিনা সে প্রশ্নটিও জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। রাজনীতিবিদরা বলেন, দেশ ও জনগণের কল্যাণে তারা রাজনীতি করেন। যারা এসএসসি ও সমমানের ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীকে সংকটের মুখে ঠেলে দিয়ে রাজনীতি করছেন তাদের বোধশক্তি সম্পর্কে আমরা সন্দিহান। দেশ ও জাতির কল্যাণের বদলে তারা সর্বনাশের অপচর্যায় লিপ্ত কিনা নিজেরা ভেবে দেখলেই ভালো করবেন। আমরা আশা করব, প্রায় ১৫ লাখ এসএসসি পরীক্ষার্থীর স্বার্থে পরীক্ষার দিনগুলোতে অবরোধ প্রত্যাহার করা হবে। নিদেনপক্ষে পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট দিনগুলোতে পেট্রলবোমা ও ককটেলচর্চা বন্ধ রাখা হবে।

সর্বশেষ খবর