বৃহস্পতিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

দারিদ্র্যমোচনে সাফল্য

দেশে অতি দরিদ্রের হার দ্রুতগতিতে কমছে। দারিদ্র্যমোচনের লড়াইয়ে বাংলাদেশ যে সাফল্যের পথে এগিয়ে যাচ্ছে এটি তার ইঙ্গিত বললেও অত্যুক্তি হবে না। সরকারের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে যে গতিতে অতি দরিদ্রের হার কমছে তা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে তা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। এ দেশের প্রতিটি সরকার তাদের নিজেদের সুনামের স্বার্থে দারিদ্র্যমোচনকে লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের সাফল্য আশাজাগানিয়া। স্বাধীনতার পর দারিদ্র্যমোচনে অর্জিত সাফল্যের ৪৫ শতাংশই এ সরকারের প্রথম পাঁচ বছরে অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ২০০৫ সালে দেশে দরিদ্রের সংখ্যা ছিল ৪০ শতাংশ, আর মোট দরিদ্র লোকের সংখ্যা ছিল পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ। ২০১৩ সালে এ সংখ্যা নেমে দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ২ শতাংশ। ওই সময় দরিদ্র লোকের মোট সংখ্যা দাঁড়ায় তিন কোটি ৫৯ লাখ। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে দারিদ্র্যের হার নেমে এসেছে ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ আর মোট দরিদ্র লোকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৫৭ লাখ। ২০০৪ সালে দেশে অতি দরিদ্রের সংখ্যা ছিল ২৪ দশমিক ২ শতাংশ, যা ২০১৩ সালে এসে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৯ শতাংশে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশে দারিদ্র্যের হার ও দরিদ্র লোকের সংখ্যা কমার পাশাপাশি লক্ষণীয়ভাবে কমেছে দারিদ্র্যের গভীরতা ও তীব্রতা। একইভাবে কমেছে আয় ও ভোগ বৈষম্যের মাত্রাও। মনে করা হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির লক্ষ্যভিত্তিক সম্প্রসারণ দারিদ্র্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। দেশে দারিদ্র্যের সংখ্যা হ্রাস নিঃসন্দেহে একটি বড় সাফল্য। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাশা ছিল একটি দারিদ্র্যমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠা। সে পথে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য অর্জিত হলেও স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও দেশের ১১ শতাংশের বেশি মানুষ হত দারিদ্র্যসীমায় অবস্থান নিঃসন্দেহে দুঃখের ও লজ্জার। এই নেতিবাচক অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে দারিদ্র্যমোচনে সরকারকে আরও দৃঢ় প্রত্যয়ী হতে হবে। দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির লক্ষ্যই হতে হবে দরিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া।

সর্বশেষ খবর