শুক্রবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

হিংসা ও পরশ্রীকাতরতা শয়তানের ভূষণ

মাওলানা মুহাম্মদ সাহেব আলী

হিংসা ও পরশ্রীকাতরতা ইবলিশের ভূষণ। ইবলিশ ছিল ফেরেশতা। দুনিয়ার প্রথম মানব হজরত আদম (আ.)-এর প্রতি আল্লাহর রহমত দেখে সে ঈর্ষায় ভোগে। আদম (আ.)-কে আল্লাহ যে মর্যাদা দেন সে তা মেনে নিতে অস্বীকার করে। এ অস্বীকৃতি ইবলিশকে বিপথগামী করে। সে অভিশপ্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়।

এই জগৎসংসারে যারা হিংসা, বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতায় ভোগে তারা প্রকৃত অর্থে ইবলিশের ঘৃণ্য পথকেই অনুসরণ করে। নিজেকে মুমিন হিসেবে ভাবতে হলে ঈর্ষার অন্ধকারাছন্ন কুঠরি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মানবজাতির আদি ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পাব পৃথিবীতে প্রথম পাপের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল ঈর্ষাকে কেন্দ্র করে। হজরত আদম (আ.)-এর পুত্র ছিলেন হাবিল ও কাবিল। কাবিল তার ভাই হাবিলকে হত্যা করে পরশ্রীকারতায় ভুগে।

হিংসা, ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতার অপগুণ বর্জন করতে পারলে মানবসমাজ শান্তির সমাজে পরিণত হবে। মানুষের মধ্যে জন্ম নেবে ভ্রাতৃত্ববোধ। এক মানুষ অপর মানুষকে আপনজন ভাবার ঔদার্যতা অর্জন করবে।

আল্লাহর রসুল আমাদের হিংসা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন, 'আগুন যেমন শুকনা কাঠকে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়, হিংসা তেমন পুণ্যকে ধ্বংস করে দেয়।' (ইবনে মাজাহ)

নিজের সৎগুণকে ধ্বংস করে দেয় হিংসা। মানুষের পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের সুখশান্তি কেড়ে নেয়। হানাহানি বা সংঘাতকে মদদ জোগায়। আর এতে সবচেয়ে খুশি হয় মানুষের অকল্যাণকামী অভিশপ্ত শয়তান। তার উদ্দেশ্য পূরণ হয় মানুষকে বিপথগামী করার মাধ্যমে।

আমরা যদি সমাজে শান্তি চাই, যদি মনুষ্য সমাজকে শান্তির সমাজে পরিণত করতে চাই, যদি আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশনাকে আমাদের চলার পথের পাথেয় করতে চাই তবে হিংসা, বিদ্বেষ, ঈর্ষা ও পরশ্রীকাতরতা থেকে দূরে থাকতে হবে। ব্যক্তি, পারিবারিক সামাজিক ও জাতীয় জীবনে পতন ডেকে আনতে পারে যে অপগুণ তা থেকে নিরাপদ দূরে থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের সে সক্ষমতা দান করুন। আমিন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

 

 

সর্বশেষ খবর