শনিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

মালয়েশিয়ায় মানব পাচার

বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলে ট্রলারডুবিতে অবৈধ পথে মালয়েশিয়াগামী প্রায় অর্ধশত যাত্রীর প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড এবং স্থানীয় অধিবাসীরা ৯টি লাশ ও ৪২ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করলেও প্রায় অর্ধশত যাত্রী এখনো নিখোঁজ। শতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে কুতুবদিয়া চ্যানেলে গত বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ডুবে যায়। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৩৪ জনকে থানা হাজতে নেওয়া হয়েছে। ছয়জনকে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে মহেশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় অবৈধ পথে যাওয়ার সময় প্রতিবছরই ট্রলারডুবিতে সলিলসমাধির ঘটনা ঘটছে। অবৈধ পথে যারা সাগর পাড়ি দিতে সমর্থ হচ্ছে তাদের একাংশকে থাইল্যান্ডে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ক্রীতদাস হিসেবে। অন্য যে অংশ মালয়েশিয়ায় পৌঁছাচ্ছে সেখানেও তাদের প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাদের পালিয়ে থাকতে হচ্ছে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নামমাত্র পারিশ্রমিকে তারা কাজ করতে বাধ্য হয়। অবৈধ অভিবাসী হওয়ায় ন্যায্য মজুরি দাবি করা যেমন সম্ভব হয় না তেমনি বিকল্প কাজের সন্ধানও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। মানব পাচার বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা বন্ধ হচ্ছে না সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবে। পাচারকারী চক্রের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কোনো সদস্যের গাঁটছড়া থাকায় প্রায় অবাধেই চলছে এই অপরাধবৃত্তি। কুতুবদিয়া চ্যানেলে গত বৃহস্পতিবার ট্রলারডুবিতে যে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে তাদের অনেকেরই যে সলিলসমাধি হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। এ ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি রোধে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানা দরকার। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সামাজিক সংগঠনগুলোকেও সচেতন হতে হবে। দেশের সুনামের স্বার্থেই পাচারকারী চক্রের সদস্যদের খুঁজে বের করা এবং শাস্তি বিধানে উদ্যোগী হতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর