শিরোনাম
রবিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি

প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির নির্মম শিকারে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। ১৬ কোটি মানুষের সব অর্জন কেড়ে নিতে উঠে পড়ে লেগেছে অপরাজনীতির অবতাররা। অবরোধ-হরতালকেন্দ্রিক টানা সহিংসতায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৪২ জনেরও বেশি। আহতের সংখ্যাও কয়েকশ ছাড়িয়ে গেছে। দেশের শিল্প, বাণিজ্য, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীকে জিম্মি বানানোর চেষ্টা করছে প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির কুশীলবরা। দেশে ১৪ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সময় অবরোধ প্রত্যাহারের বদলে বাড়তি আতঙ্ক হিসেবে ৭২ ঘণ্টার হরতালও ডাকা হয়েছে। তাত্তি্বকভাবে বিরোধী দলের অবরোধের টার্গেট যে সরকার সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই। কিন্তু দেশের মানুষ তাজ্জব হয়ে দেখছে সরকার পতনের আন্দোলনের নামে কার্যত জনগণকেই টার্গেট করা হচ্ছে। রাজনীতির অপখেলায় তারা কোনো পক্ষে না থাকলেও প্রতিদিনই তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। চাকরিজীবীদের জন্যও থাবা বিস্তার করছে নানামুখী সংকট। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। দেশে যে সাংঘর্ষিক রাজনীতি চলছে তাতে সরকার ও বিরোধী দল উভয় পক্ষই জনস্বার্থের দোহাই দিচ্ছে। যে কোনোভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং ক্ষমতায় যাওয়ার এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাধারণ মানুষের কোনো স্বার্থ না থাকলেও চূড়ান্ত বিচারে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের জানমালের নিরাপত্তা কেড়ে নিচ্ছে প্রতিহিংসাপরায়ণতার রাজনীতি। রাজনীতির লক্ষ্য জনকল্যাণ। দেশের চলমান রাজনীতির সঙ্গে জনস্বার্থ বা জনকল্যাণের কোনো সম্পর্ক না থাকায় সাংঘর্ষিক কর্মকাণ্ড দানা বেঁধে উঠছে। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার বদলে পেছনে নেওয়ার আত্দঘাতী প্রবণতা রাজনীতিকদের প্রলুব্ধ করছে। যেসব ইস্যু নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সংঘাত চলছে তার সমাধানে আলাপ-আলোচনার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সে পথে না যাওয়ার অবিমৃষ্যকারিতা সংকটকে গভীর থেকে গভীরতর করছে। এ সংকট থেকে জাতি মুক্তি চায় এবং মুক্তির একমাত্র পথ হলো প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতিকে না বলা। যারা জনগণের জীবন-জীবিকাকে সংকটের মুখে ফেলছে, দেশের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে তুলছে তাদের চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করা। ব্যক্তিকেন্দ্রিক ও পারিবারিককেন্দ্রিক রাজনীতির গোলামি করার বদলে মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তিবিবেকের সাচ্চা গণতান্ত্রিক রাজনীতির উন্মেষ ঘটানো।

সর্বশেষ খবর