রবিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
স্থাপত্য

দিওয়ানে খাস

দিওয়ানে খাস

মোগল সম্রাট শাহজাহান এবং তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন ও পারিষদবর্গ নিয়ে দিওয়ানে খাসে বসতেন। শাহজাদা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় অত্যন্ত গোপনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো এখানে। পুরো প্রাসাদের এটিই ছিল সবচেয়ে জাঁকজমক ও অলংকারপূর্ণ। শ্বেতপাথরের তৈরি প্রাসাদের দরবার কক্ষটির সামনে মূল্যবান পাথরে সোনার হরফে লেখা ছিল : 'আগার ফেরদৌস বর রুয়ে জামিনাস্ত হামিনাস্ত ও হামিনাস্ত ও হামিনাস্ত।'

'এ ধরার বুকে যদি থাকে বেহেশতের বাগান এই সেই স্থান এই সেই স্থান এই সেই স্থান।' বিখ্যাত 'তখত-ই-তায়ুস' বা ময়ূর সিংহাসনও এখানে বসানো ছিল। দিওয়ানে খাসের কাছেই ছিল হেরেম। তারই এক প্রান্তে ছিল যমুনামুখী ৮ কোনাবিশিষ্ট একটি ঝুল বারান্দা। নাম ছিল মুছামা বুরজ। এখানে বসেই প্রতিদিন সকালে শাহজাহান ঝরোকা দর্শন দিতেন। মোগল সম্রাটদের জন্য ঝরোকা দর্শনদান ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কারণে উপর্যুপরি কয়েক দিন সম্রাট এখানে না দর্শন দিতে পারলে নানা গুজবের সৃষ্টি হতো। এখানেও সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত হতে পারত। দেড় থেকে দুই ঘণ্টা চলত ঝরোকা দর্শন। এখানে বসেই সম্রাট হাতি, ঘোড়া প্রভৃতি রাজকীয় জন্তু পরীক্ষা করতেন।

বার্নিয়ার এ সম্পর্কে বলেন, 'একটু আগে আমি যেসব স্থানের নামোল্লেখ করেছি সেগুলো অতিক্রমের পর যার নিকট আপনি পেঁৗছবেন, সেই 'আম-ও খাসের' কথা আমি অবশ্যই ভুলতে পারব না। এটা প্রকৃতই চমৎকার একটি অট্টালিকা, এতে আছে খিলানের তৈরি বিশাল চতুষ্কোণ একটি কোর্ট, যা 'পেস রয়াল'-এর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়; পার্থক্য শুধু এই যে, 'আম ও খাস'-এর তোরণগুলোর ওপর কোনো ঘরবাড়ি নেই। প্রতিটি খিলান দেয়াল দিয়ে বিচ্ছিন্ন। তবে খিলানগুলো এমন কৌশলে নির্মিত হয়েছে যে একটি খিলান থেকে আরেকটিতে যাওয়ার মতো ছোট ছোট দরজা আছে।

গ্রন্থনা : শাকিল জাহান

 

 

সর্বশেষ খবর