রবিবার, ১ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

পোশাকশিল্পের সংকট

একটানা অবরোধ-হরতাল এবং নাশকতা দেশের তৈরি পোশাকশিল্পকে গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। অবরোধ ও নাশকতা উপেক্ষা করে দেশের সব পোশাক কারখানা সচল রয়েছে। ক্রেতাদের কাছে সময় মতো পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রেও তেমন কোনো হেরফের নেই। তারপরও ক্রেতাদের আস্থা ঠিক রাখতে গার্মেন্ট মালিকদের ঘাম ঝরাতে হচ্ছে। নাশকতার ভয়ে অবরোধের প্রায় দুই মাসে বিদেশি পোশাক ক্রেতাদের বাংলাদেশ সফর হ্রাস পেয়েছে ব্যাপকভাবে। ফলে তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের মালিকদের বিদেশে যেতে হচ্ছে। এ বাবদ ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা ক্রেতাদের আশ্বস্ত করতে 'ক্যাম্পেইন'ও শুরু করেছেন। বাংলাদেশে এলে ক্রেতা প্রতিনিধিদের পুলিশি নিরাপত্তার আশ্বাসও দেওয়া হচ্ছে। নাশকতানির্ভর অবরোধ দেশের পোশাকশিল্পের জন্য কতটা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে তাৎক্ষণিকভাবে বোঝার উপায় নেই। কারণ এখনো পোশাক কারখানাগুলো চার মাস আগে পাওয়া রপ্তানির আদেশ নিয়েই ব্যস্ত। রপ্তানিও সচল রয়েছে আগে পাওয়া কার্যাদেশের ভিত্তিতে। এপ্রিল থেকে শুরু হবে নতুন রপ্তানি আদেশ পাওয়ার মৌসুম। সে পর্যন্ত নাশকতা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে দেশের ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের উৎস পোশাকশিল্প হুমকির মধ্যে পড়বে। কারণ বিদেশি ক্রেতারা নাশকতা ও সহিংসতানির্ভর রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে বাংলাদেশে পা দেবেন কিনা সংশয়ের বিষয়। বিদেশে গিয়ে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেন-দরবারের সুযোগ থাকলেও দেশের মাত্র ৩০ শতাংশ পোশাকশিল্প মালিকের সে সামর্থ্য আছে। বাংলাদেশের পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি থাকলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে না এলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বৃহত্তম খাতটি সংকটের মুখে পড়তে পারে। এ আশঙ্কা রোধে নাশকতা মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে সংলাপের মাধ্যমে সাংঘর্ষিক অবস্থানের অবসান ঘটিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।

সর্বশেষ খবর