সোমবার, ২ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামের জঙ্গি আস্তানা

চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র হালিশহরের গোল্ডেন কমপ্লেক্স আবাসিক এলাকায় জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়েছে র্যাব সদস্যরা। এ জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৫০ কেজি শক্তিশালী বিস্ফোরক, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ৭৬টি হ্যান্ড গ্রেনেড, গুলিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম। র্যাব মহাপরিচালকের মতে, উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক দিয়ে সেনাবাহিনীর একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাটালিয়নের মোকাবিলা করা সম্ভব। চট্টগ্রামে পরপর কয়েকটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান লাভ জঙ্গিবাদীদের থাবা কতটা বিস্তার লাভ করেছে তারই সুস্পষ্ট পরিচায়ক। সাম্প্রতিক নাশকতানির্ভর অবরোধ কর্মসূচিতে চট্টগ্রামের পরিস্থিতি বেশ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তাতে যে স্বস্তির অবকাশ নেই হাটহাজারী ও বাঁশখালীতে দুটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরের সন্ধান লাভের পর চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান লাভ সে প্রমাণই রেখেছে। এ জঙ্গি আস্তানার সঙ্গে জঙ্গিদের কোন গ্রুপ জড়িত, তা আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং যথাযথ তদন্তে জানা যাবে। জঙ্গিরা যে পরিকল্পিতভাবে নাশকতার দিকে এগুচ্ছে তা এই আস্তানা থেকে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক এবং সরঞ্জামে অনুমান করা যায়। সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধোঁকা দিতে তারা বাচ্চাদের পানির ফ্লাস্ক ব্যবহার করেছে বোমার শেল বা খাপ হিসেবে। প্রকাশ্যে এ ধরনের ফ্লাস্ক নিয়ে কেউ হেঁটে গেলেও তা কারোর সন্দেহ হওয়ার কথা নয়। অথচ এ ধরনের প্রাণঘাতী অস্ত্র শত শত মানুষের প্রাণহানির কারণ ঘটাতে পারে। চট্টগ্রামের জঙ্গি আস্তানা থেকে যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার মধ্যে একজন নারী সদস্যও রয়েছে। ইতিপূর্বে জেএমবির আস্তানা থেকেও নারী ও শিশু সদস্যদের আটক করেছে র্যাব। জঙ্গি তৎপরতা বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতাকে বিপদমুক্ত রাখতে হলে এই অপতৎপরতা রোধে আরও সক্রিয় হতে হবে। জঙ্গিবাদের আসল চেহারা উন্মোচনেও হতে হবে যত্নবান। পবিত্র ধর্মের নামে জঙ্গি তৎপরতা চালানো হলেও এরা যে ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিপন্থী কাজে লিপ্ত সে বিষয়টি জনসম্মুখে স্পষ্ট করতে হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর