বুধবার, ৪ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

ফ্যাসিবাদী তাণ্ডব

অবরোধের ৫৭তম দিনে সোমবার রাজধানীতে তাণ্ডব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। দিনদুপুরে মাত্র পাঁচ মিনিটেই সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হাতিরঝিল প্রকল্পে তাণ্ডব চালিয়ে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগের মাধ্যমে তারা নিজেদের দুঃসাহসের জানান দিয়েছে। বিজয়নগর মোড়েও চলেছে একই ধরনের তাণ্ডব। রাজধানীসহ সারা দেশে ২০-দলীয় জোটের নাশকতানির্ভর অবরোধ-হরতাল সত্ত্বেও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে আসছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় হ্রাস পাচ্ছিল পেট্রলবোমা ও ককটেল হামলা। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করার সময় যখন ঘনিয়ে আসছে তখন সারা দেশে নাশকতা বৃদ্ধির ঘটনাকে দল বিশেষের প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। অপরের মাথায় কাঁঠাল রেখে তা খাওয়ার যে অপকৌশল তারা বেছে নিয়েছে তা উদারপন্থি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপির ভাবমূর্তিকে জিম্মি করে ফেলেছে। অবরোধ-হরতাল পালনে বিএনপি যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত দলটির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় তারা শ্যাম রাখি না কুল রাখি দ্বন্দ্বের শিকার হচ্ছে। ২০-দলীয় জোট অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তাদের ভাষায় জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু গণতন্ত্রের নামে তাদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যেভাবে নাশকতার চর্চা চলছে, সাধারণ মানুষের জানমালের ওপর আঘাত হানা হচ্ছে তা গণতান্ত্রিক চেতনার সঙ্গে বেমানান। মানুষ পুড়িয়ে হত্যা এবং রাষ্ট্র ও সাধারণ মানুষের সম্পত্তি ধ্বংস করা সর্বোচ্চ দণ্ডযোগ্য অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত কিংবা যারা এর মদদদাতা তাদের হাতে ক্ষমতা গেলে কী ধরনের গণতন্ত্র কায়েম হবে তা আল্লা মালুম। ২০-দলীয় জোট গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলে দাবি করতে চাইলে তাদের আন্দোলনকেও গণতন্ত্রসম্মত পথে এগিয়ে নিতে হবে। ফ্যাসিস্ট কায়দায় নিজেদের ইচ্ছা অপরের ওপর চাপিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই গণতন্ত্র সম্মত নয়। নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান না চাইলে পেট্রলবোমা, ককটেল এবং ভাঙচুর তত্ত্বের পুজারিদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়াতেই হবে।

সর্বশেষ খবর