বুধবার, ৪ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

শাহজালালে যাত্রী হয়রানি

ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর আর যাত্রী হয়রানি যেন একই মুদ্রার দুই পিঠ। কারও সাধ্য নেই এ দুটিকে বিচ্ছিন্ন করার। ফলে সংবাদ মাধ্যমের এত লেখালেখির পরও শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি কিছুতেই কমছে না। বিদেশ থেকে দেশে ফেরার সময় বিমানবন্দরে কর্তব্যরত ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও পুলিশ সদস্যদের হয়রানির শিকার হচ্ছে প্রবাসীরা। যাদের পাঠানো টাকায় দেশের অর্থনীতি সচল থাকে, যাদের দেওয়া ট্যাক্সে টাকায় বিমানবন্দরে কর্মরত কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বেতন দেওয়া হয় সেই প্রবাসীদের সঙ্গে তুই-তোকারি করতেও তাদের বাধে না। প্রবাসীদের ব্যাগ থেকে জিনিসপত্র রেখে দেওয়া ও উৎকোচ আদায় নিত্যকার ঘটনা। বছরের পর বছর ধরে এই হয়রানি চললেও তা দেখার কেউ নেই। বিদেশ গমনের ক্ষেত্রেও যাত্রীরা নাজেহাল হন পদে পদে। এ বিষয়ে মাঝে মাঝে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হয়, বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার বৈঠকে কখনো কখনো হয়রানি বন্ধে যুতসই সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়, কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘণ্টি বাঁধতে কেউ এগিয়ে আসেন না। অভিযোগ রয়েছে, বিমানবন্দরের দুর্নীতির সঙ্গে নেপথ্যেরও অনেকে জড়িত। দুর্নীতিবাজদের হাত এতটাই লম্বা যে তা প্রতিহত করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। পাশের দেশ ভারতের রাজধানী দিলি্লর বিমানবন্দরে কাস্টমস ইমিগ্রেশন কাগজপত্র ঠিক করতে জনপ্রতি সময় নেয় মাত্র পাঁচ মিনিট। শাহজালাল বিমানবন্দরে সময় লাগে কমপক্ষে এক ঘণ্টা। যাত্রীসেবার জন্য এ বিমানবন্দরে কারও দেখা পাওয়া ভার। ট্রলি খুঁজে পেতেও হয়রান হতে হয়। তবে বকশিশ আদায়ের জন্য কেউ যেন পিছিয়ে থাকতে চান না। বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহনের যেসব ট্যাক্সি থাকে তারা আদায় করেন কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। বিমানবন্দরজুড়ে প্রতারকদের ভিড়ও লেগে থাকে। যাত্রী হয়রানির দিক থেকে শাহজালাল বিমানবন্দরের স্থান এখন শীর্ষস্থানীয় এমন কথাও বলেন অভিজ্ঞজনরা। দেশের প্রধান বিমানবন্দরের এ বেহাল অবস্থা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বিমানবন্দরের সর্বস্তরে উৎকোচখোরদের প্রাধান্য এর নিরাপত্তার জন্য ধকল সৃষ্টি করছে। যার অবসান হওয়া উচিত। আমরা আশা করব দেশের সুনামের স্বার্থে শাহজালাল বিমানবন্দরকে উৎকোচখোর ও লুটেরাদের দৌরাত্দ্য থেকে মুক্ত করা হবে।

এটি সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

 

 

সর্বশেষ খবর