বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

উধাও খেলার মাঠ

রাজধানী ঢাকা থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে খেলার মাঠ। একসময় রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় ছিল খেলার মাঠ। কালের বিবর্তনে সেগুলো আজ অপদখলের শিকার। একসময় যেসব মাঠে ছিল ফুটবল নিয়ে শিশু-কিশোরদের অনুশীলন, যেসব মাঠে ঘোরাফেরা করে মুক্তবায়ু সেবনের সুযোগ পেত এলাকার মানুষ সেগুলো এখন অপদখলের শিকার। তার কোনোটিতে গড়ে উঠেছে সরকারি স্থাপনা, কোনোটিতে মার্কেট। ২০০৩ সালে রাজধানীর খেলার মাঠ ও পার্ক বেদখলের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনজীবী সমিতি হাইকোর্টে একটি রিট করে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের পক্ষ থেকে ২০০৪ সালে একই বিষয়ে রিট হয়। এই দুই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানী ঢাকার ৬৮টি খেলার মাঠ ও পার্কের জন্য সংরক্ষিত জায়গা ১৫ দিনের মধ্যে দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ সময়ের মধ্যে এসব খেলার মাঠ, খোলা জায়গা ও পার্কের সীমানা চিহ্নিত করতেও দেওয়া হয় নির্দেশ। পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন হলফনামা আকারে আদালতে দাখিল করার জন্য রাজউক ও ঢাকা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। দুটি পৃথক রিটের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। কিন্তু আদালতের সে আদেশ পালনে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতিই লক্ষ্য করা যায়নি। বরং পরবর্তী বছরগুলোতে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ডিসিসির বিভিন্ন মাঠ ও মিনিপার্ক রিকশাভ্যানের গ্যারেজ এবং ট্রান্সপোর্টের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। রাজধানীর শিশু-কিশোরদের খেলাধুলা করা ও সাধারণ মানুষের মুক্তবায়ু সেবনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে কর্তৃপক্ষীয় নজরদারির অভাবে। রাজধানীতে খেলার মাঠ না থাকায় কিশোর-তরুণরা মানসিক প্রতিবন্ধিকতার শিকার হচ্ছে। তাদের মন-মানসিকতায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। এ অবস্থার অবসানে ঢাকা সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সচেতন হতে হবে। অপদখলকৃত সব মাঠ যাতে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া যায় সে উদ্যোগও নেওয়া দরকার।

সর্বশেষ খবর