বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইতিহাস

বায়বার্সের কৃতিত্ব

যোগ্য শাসক ও দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে বায়বার্সের কৃতিত্ব বিশেষভাবে প্রতীয়মান হয়- প্রথমত, মোঙ্গলের অভিযান প্রতিহত করা; দ্বিতীয়ত, ক্রুসেডারদের আক্রমণ রোধ করা। হিট্টি বলেন, 'তার যশের মূল উৎস ছিল ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানসমূহ।' তিনি বীরত্বের সঙ্গে ফ্রাঙ্ক শক্তিকে খর্ব করেন এবং এর ফলে তার উত্তরাধিকারী কালাউন এবং আল-আশরাফের পক্ষে ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সাফল্যজনক সমরাভিযান পরিচালনা করা সম্ভবপর হয়। বায়বার্স ক্রুসেডারদের সঙ্গে দীর্ঘদিন (১২৬৩-৭১) যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন এবং তার কৃতিত্ব ও বীরত্ব সালাহউদ্দীনের সমতুল্য ছিল। এ সময়ের মধ্যে তিনি প্রতি বছর ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে অভিযান পাঠান এবং ল্যাটিন রাজ্যভুক্ত অঞ্চলসমূহ তিনি একে একে দখল করেন। সিরিয়ায় ফ্রাঙ্ক শক্তি কর্তৃক অধিকৃত অঞ্চলসমূহে মামলুক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ১২৬৩ খ্রিস্টাব্দে বায়বার্সকারক দুর্গ দখল করেন। ১২৬৫ খ্রিস্টাব্দে সিজারীয় অধিকৃত হওয়ার পর ৪০ দিন আরসক অবরুদ্ধ থাকে এবং এরপর মুসলমানরা দখল করেন। তিনি সাফাদ জয় করে জর্দান নদীর ওপর একটি পুল নির্মাণ করেন। এতে এখনো বায়বার্সের একটি শিলালিপি দেখতে পাওয়া যায়। ১২৬৮ খ্রিস্টাব্দে ক্রুসেডারদের কাছ থেকে জাফফা অধিকার করা হয়। এরপর সাফাত অধিকৃত হয়। এই সমরাভিযানের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল এন্টিওক দখল। এশীয় খ্রিস্টানদের দুর্ভেদ্য দুর্গ এন্টিওক মুসলমানদের করতলগত হলে ক্রুসেডারদের প্রাধান্য লোপ পায়। মুসলিম বিজয়ের ফলে সিরিয়ার অপরাপর ক্রুসেডারের ঘাঁটির পতন হতে থাকে এবং বায়বার্স অতি সহজেই ১২৭১ খ্রিস্টাব্দে অপরাপর ক্ষুদ্র দুর্গ হিসন আল-আকরাদ, মাসয়াদ, আল-কাদমুর্স, আল-কাহাফ এবং আল-কাওয়ারী দখল করেন। ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে বায়বার্সের অসামান্য সামরিক সাফল্য তাকে দ্বিতীয় সালাহউদ্দীনের মর্যাদা দান করেন।

সর্বশেষ খবর