শনিবার, ৭ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

সোনা চোরাচালান

সোনা চোরাচালানের মহোৎসবে কিছুতেই বাদ সাধা যাচ্ছে না। গত ২০ মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছে ২৪ মণ সোনা। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়েছে ২৩ কেজি ওজনের ২০০টি সোনার বার। শুক্রবার ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ২৮ কেজি সোনাসহ আটক করা হয়েছে একজন উত্তর কোরীয় কূটনীতিককে। বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত 'সমাজতান্ত্রিক রাজতন্ত্র' উত্তর কোরিয়ার কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগ একটি ওপেন সিক্রেট। শুক্রবার সিঙ্গাপুর থেকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ওই সোনা আনা হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুল্ক বিভাগের লোকেরা এ সোনা আটক করতে সক্ষম হন। বাংলাদেশে সোনার খনি না থাকলেও শাহজালালসহ তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোনা ধরা পড়া নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। সোনা চোরাকারবারিরা পাচারের জন্য সিংহভাগ ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে। সোনা চোরাচালানের সঙ্গে দেশের জাতীয় বিমান সংস্থার সিংহভাগ কর্মকর্তা জড়িত এ বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়ার পর চোরাকারবারিরা সোনা পাচারের রুট পরিবর্তনের কসরত চালাচ্ছেন। মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা সোনা একের পর এক ধরা পড়ায় সিঙ্গাপুরকে সোনা চালানের রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো চোরাকারবারিদের অভয়ারণ্য হিসেবে অভিহিত হচ্ছে বিমানবন্দরসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বহীনতার কারণে। গত ২০ মাসে ২৪ মণ সোনা উদ্ধার তারই প্রমাণ। আনুমানিক হিসাবে প্রতি ৫০টি চালানে সর্বাধিক একটি সোনার চালান ধরা পড়তে পারে। সে হিসাবে গত ২০ মাসে প্রায় ২ হাজার ২০০ মণ সোনা চোরাচালান হয়ে দেশে এসেছে। বিমান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক বড় অংশ চোরাকারবারিদের ভাড়াটে হিসেবে ভূমিকা পালন করায় জাতীয় নিরাপত্তার জন্য তা হুমকি হয়েও দাঁড়িয়েছে। বলা হচ্ছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবং দেশের বিমানবন্দরগুলো চোরাকারবারিদের দ্বারা পরিচালিত হয়। জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থায় চোরাকারবারিরা খুঁটি গাড়বেন এটি অপ্রতাশিত। দেশের বিমানবন্দরগুলো চোরাকারবারিদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে এটিও কাম্য হতে পারে না। জাতীয় মর্যাদা এবং নিরাপত্তার স্বার্থে দেশের বিমানবন্দরগুলোকে চোরাকারবারি চক্রের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।

সর্বশেষ খবর