শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইতিহাসের পাতা থেকে

মুতার যুদ্ধ

হজ থেকে ফিরে এসে হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিভিন্ন গোত্রীয় নেতাদের অনুরোধে নানা স্থানে ইসলামের দূত প্রেরণ করলেন। কোনো কোনো স্থানে মুসলিম দূতের প্রতি অশোভন ও বিরোধমূলক আচরণ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মহানবী বিভিন্ন স্থানে বিধর্মীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযান প্রেরণ করেন। ইবনে হিশাম ও ওয়াকিদীর মতে, হজরত মুহাম্মদ (সা.) হোদায়বিয়া সন্ধি স্বাক্ষরের পর থেকে মক্কা বিজয় (জানুয়ারি ৬৩০ খ্রি.) পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মোট ১৭টি অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। তিনি উত্তরদিকে যে তিনটি অভিযান পরিচালনা করেছিলেন, মুতার যুদ্ধ তন্মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য। রোমীয় সামন্তরাজ মোরাহ বিল মুতা নামক স্থানে মুহাম্মদ (সা.) প্রেরিত মুসলিম রাজদূতকে হত্যা করেন। হরজত মুহাম্মদ (সা.) তখন বাধ্য হয়ে অষ্টম হিজরিতে যায়েদ-বিন-হারিসের নেতৃত্বে একদল সৈন্য মুতাভিমুখে পাঠিয়ে দিলেন। সিরিয়া সীমান্তে মুতা প্রান্তরে দুই দলে তুমুল যুদ্ধ বাধল। যায়েদের নেতৃত্বে সৈন্যসংখ্যা ছিল মাত্র তিন হাজার এবং অন্যদিকে রোমানরা ছিল লক্ষাধিক। বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে সেনাপতি যায়েদ এবং পরে জাফর ও আবদুল্লাহ শহীদ হন। মুসলমানদের এ বিপর্যয়ের মুখে মহাবীর খালিদ সেনাপতিত্ব গ্রহণ করলেন। তাকে পেয়ে মুসলিম সৈনিকদের মনে নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা ফিরে এলো। রণনিপুণ খালিদ যুদ্ধের অবস্থানদৃষ্টে পশ্চাদপসরণই উপযুক্ত মনে করলেন। বুদ্ধিমান খালিদের এ সিদ্ধান্ত মুতার যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয়কে সম্ভব করেছিল। ইতিমধ্যে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রেরিত একটি সাহায্যকারী সেনাদল মুতার এসে পৌঁছল। শক্তিমান খালিদের নেতৃত্বে মুসলিম সেনাবাহিনী এবার প্রচণ্ড বিক্রমে শত্রুদের ওপর আঘাত হানল এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিল। মুতার ময়দানে ইসলামের বিজয় পতাকা উড়ল। এ যুদ্ধের পর নবীজী খালিদ-বিন ওয়ালিদকে বীরত্বের জন্য 'সায়ফুল্লাহ' (আল্লাহর তরবারি) উপাধি দান করলেন।

 

 

সর্বশেষ খবর