মালদ্বীপে বিদেশিদের ওপর হামলার প্রবণতা হঠাৎ করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশটির সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিনে বেশকিছু বিদেশি অভিবাসী হতাহত হয়েছেন দুষ্কৃতিকারীদের আক্রমণে। দ্বীপদেশ মালদ্বীপে ৫০ হাজার বিদেশি অভিবাসী রয়েছেন যাদের সিংহভাগই বাংলাদেশি। রবিবার ও সোমবার দুই বাংলাদেশি অভিবাসী হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। গত কয়েক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত নয়জন। মালদ্বীপে অপরাধপ্রবণতা ছিল একসময় বিরল বিষয়। রাজনৈতিক সংঘাত হঠাৎ করে তা উসকে দিয়েছে। সরকার ও বিরোধী দলের বিরোধে আক্রান্ত হচ্ছেন বিদেশিরাও। শুধু বাংলাদেশি নয়, ভারত ও থাই নাগরিকরাও আক্রান্ত হয়েছেন সংঘবদ্ধ দুষ্কৃতিকারীদের হাতে। মালদ্বীপ পর্যটননির্ভর দেশ। দেশটির শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যটকদের প্রশংসাও অর্জন করছে বছরের পর বছর। হঠাৎ করে অসহিষ্ণুতা দানা বেঁধে ওঠায় সে সুনাম বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সার্কভুক্ত দেশ মালদ্বীপে বিদেশিদের ওপর হামলা বাংলাদেশের জন্য বাড়তি উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মালদ্বীপে বিদেশি অভিবাসীদের বেশির ভাগই যেহেতু বাংলাদেশি সেহেতু তারাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। মালদ্বীপের মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিদেশি কর্মীদের ওপর হামলায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেগুলোর সময়সূচিতে পরিবর্তন আনার কথা ভাবা হচ্ছে। মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার বিদেশি কর্মীদের ওপর হামলা বন্ধে সে দেশের শীর্ষ পর্যায়ে যোগাযোগ করেছেন। মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে হামলাকারীদের নিরস্ত করতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে। আমরা আশা করব শান্তির দ্বীপ মালদ্বীপের সুনামের স্বার্থেই বিদেশি কর্মীদের নিরাপত্তাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে মালদ্বীপের পরিস্থিতির দিকে তীক্ষ্ন নজর রাখা হবে, আমরা এমনটি দেখতে চাই। জীবিকার তাগিদে যারা মালদ্বীপ গেছেন তাদের কেউ লাশ হয়ে ফিরবেন, তা কারও কাম্য হওয়া উচিত নয়।