রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

সন্তানের ওপর পিতা-মাতার অধিকার

মাওলানা মুহাম্মদ সাহেব আলী

প্রতিটি সন্তানেরই বাবা-মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। বাবা-মা সন্তানের জন্মদানই শুধু নয়, তাদের পালনের জন্য অসামান্য ত্যাগ স্বীকার করেন। বাবা-মায়ের নির্দেশ মান্য করা, সর্বোত্তম সেবাযত্ন নেওয়া এবং তাদের সন্তুষ্ট রাখা প্রতিটি সন্তানের কর্তব্য। সন্তানের ওপর বাবা-মায়ের এসব হক তাদের মৃত্যুর পরও শেষ হয়ে যায় না। পরলোকগত পিতা-মাতার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করা, তাদের ওয়াদা পূরণ করা, তাদের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা প্রতিটি সন্তানের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। আবু উসাইদ (রা.) বর্ণিত : তিনি বলেন, আমরা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত ছিলাম। এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসুল, পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার এমন কোনো উপায় আছে কি যা আমি অনুসরণ করতে পারি? তিনি বলেন, হ্যাঁ, চারটি উপায় আছে : (১) তাদের জন্য দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা, (২) তাদের কৃত ওয়াদা পূরণ করা, (৩) তাদের বন্ধু-বান্ধব ও অন্তরঙ্গ ব্যক্তিদের সম্মান প্রদর্শন করা এবং (৪) তাদের মাধ্যমে তোমার সঙ্গে আত্মীয়তার যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তা অক্ষুণ্ন রাখা (আদাবুল মুফরাদ)।

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত : সাদ ইবনে উবাদা (রা.) তার মায়ের কৃত মানত সম্পর্কে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, যা তার মা পূর্ণ করার আগেই মারা যান। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মায়ের মানত পূর্ণ করার জন্য তাকে নির্দেশ দিলেন (বুখারি ও মুসলিম থেকে মিশকাতে)।

বাবা-মা সন্তানের সন্তুষ্টির জন্য, তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সাধ্যের সবটুকুই করার চেষ্টা করেন। সন্তানদেরও উচিত বাবা-মাকে সন্তুষ্টিতে রাখা। তাদের মুখে হাসি ফোটানো। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের তেমন নির্দেশই দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন, এক ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে ক্রন্দনরত অবস্থায় রেখে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে হিজরতের উদ্দেশ্যে বাইআত হওয়ার জন্য উপস্থিত হলো। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : পিতা-মাতার কাছে ফিরে যাও এবং তাদের যেমনিভাবে কাঁদিয়ে এসেছ, তেমনিভাবে তাদের মুখে হাসি ফোটাও (আদাবুল মুফরাদ)। উপরোক্ত হাদিসটির দ্বারা বোঝানো হয়েছে পিতা-মাতা যদি দুর্বল, বৃদ্ধ ও সন্তানের সাহায্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন তবে এ অবস্থায় তাদের সাহচার্য দেওয়া ও সেবা-শুশ্রূষা করা হিজরতের মতো উত্তম আমলের চেয়েও অধিক উত্তম।

লেখক : ইসলামী গবেষক

 

 

সর্বশেষ খবর