মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

আবারও যানজট জনজট

রাজধানীর যানজট ও জনজট তার অক্ষয় প্রতাপ অব্যাহত রাখার কৃতিত্ব দেখিয়েছে ২০-দলীয় জোটের অবরোধ-হরতালের মধ্যেও। ককটেল ও পেট্রলবোমায় মানুষ পুড়িয়ে তারা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারলেও রাজধানীবাসীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রা স্তব্ধ করতে পারেনি। পেট্রলবোমানির্ভর হরতাল-অবরোধের মধ্যেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দেখা দিয়েছে যানজট। সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০-দলীয় জোটের কর্মসূচি কিছুটা শিথিল হতে না হতেই রাজধানী আবারও যানজট ও জনজটের নগরীতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের আর কোথাও ঢাকার মতো বিরক্তিকর যানজটের আবির্ভাব হয় কিনা আমাদের জানা নেই। যানজট রাজধানীর নগরজীবনকেই শুধু বিপর্যস্ত করে তুলছে না, বসবাসের অযোগ্য নগরী হিসেবে ঢাকার স্থায়ী পরিচিতি এনে দিয়েছে। যানজটে এমনই অচলাবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে যে, আধা ঘণ্টা দূরত্বের সড়ক অতিক্রম করতে গড়ে সাত-আটগুণ পর্যন্ত সময় লাগছে। রাজধানীর যানজটের জন্য প্রাইভেট কারের মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যা বৃদ্ধিকে দায়ী করা হয়। বলা হয়, রিকশার পাশাপাশি প্রাইভেট কারের আধিক্য অচলাবস্থার সৃষ্টি করছে। তবে অভিজ্ঞজনদের বিবেচনায় ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা যানজটের জন্য প্রধানত দায়ী। ঢাকার রাজপথের এক বড় অংশ অবৈধ দখলদারদের দখলে। তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক টাউট, পাড়া-মহল্লার মাস্তান এবং পুলিশের সম্পর্ক থাকায় রাজধানীর সড়কগুলো দখলমুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজধানীর সড়ক ও ফুটপাথ থেকে অবৈধ দোকানপাট উঠিয়ে দেওয়া সম্ভব হলে যানজট এমনিতেই সহনীয় হয়ে উঠবে। এর পাশাপাশি কঠোরভাবে ট্রাফিক আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হলে যানজটের রাশ টেনে ধরা সম্ভব হবে। যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং যানজটের অন্যতম কারণ। যেখানে-সেখানে গাড়ি ঘোরানো এবং রাজপথে মিছিল-মিটিংয়ের প্রবণতাও যানজটে উৎসাহ জোগায়। এ সমস্যার গ্রন্থিমোচনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে হবে। রাজধানীর যেখানে-সেখানে গড়ে ওঠা বিপণি কেন্দ্রগুলোও যানজটের জন্য অনেকাংশে দায়ী। যানজটের কাছে রাজধানীর দেড় কোটি মানুষ জিম্মি হয়ে থাকবে তা কোনো অবস্থায়ই কাম্য হতে পারে না। রাজধানীকে বসবাসের অযোগ্য অচল নগরী হিসেবে দেখতে না চাইলে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।

সর্বশেষ খবর