বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রার্থীদের হলফনামা

দেশের তিন বৃহত্তম স্থানীয় সরকারের নির্বাচন নিয়ে সাজ সাজ রব পড়েছে। ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ৬০ জন প্রার্থী। তিন সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা তাদের হলফনামায় নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, আর্থিক সামর্থ্য এবং ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে অনেক তথ্য জমা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে। হলফনামা অনুযায়ী তাদের মধ্যে দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ ডিগ্রিধারী প্রার্থী যেমন আছেন তেমনি আছেন অক্ষর-জ্ঞানসম্পন্নরাও। ঢাকা মহানগরীতে ৫০টির বেশি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। নাগরিকদের মধ্যে উচ্চ শিক্ষিতের সংখ্যাও কয়েক লাখ। অথচ এহেন মহানগরীর নগরপিতা পদে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের কারও কারও শিক্ষাগত যোগ্যতার বহর দেখে মনেই হতে পারে, নির্বাচনে হয়তো শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনো বিষয় নয়। নির্বাচনী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার বহর নাগরিকদের মনোজগতকে বধির করার জন্য যথেষ্ট বললেও অত্যুক্তি হবে না। বিরোধী দল সমর্থক প্রার্থীদের প্রায় সবাই মামলার ভারে আক্রান্ত। কেউ কেউ ফেরারি অবস্থায় তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে আনা মামলাগুলো সঠিক হলে নির্বাচনে কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সে বিষয়ে ভিরমি খেতে হবে। আর মামলাগুলো যদি প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আরোপিত হয়ে থাকে তবে স্বীকার করতেই হবে, স্বাধীনতার ৪৪ বছরেও দেশ গণতন্ত্র চর্চার উপযোগী হয়ে উঠল না। ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি করপোরেশন দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত। দুনিয়ার অন্তত ৫০টি দেশের জনসংখ্যা এর যে কোনো সিটির জনসংখ্যার চেয়ে কম। বাংলাদেশ যখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বহির্বিশ্বে বিবেচিত হচ্ছে সেই মুহূর্তে দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র বলে বিবেচিত তিন মহানগরীর নির্বাচনে নগরপিতা পদে সত্যিকারের যোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচিত হবেন এমনটিই কাঙ্ক্ষিত। নিজেদের মর্যাদার স্বার্থে তিন সিটি করপোরেশনের ভোটাররা সত্যিকারের যোগ্য এবং সৎ ব্যক্তিদের নির্বাচিত করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। টাকার জোরে যারা প্রার্থী হয়ে নির্বাচনকে তামাশায় পরিণত করতে চাচ্ছেন সেসব সার্কাসের ক্লাউনদের প্রত্যাখ্যান করাও ভোটারদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর