বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ

তিন সিটি নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রবণতা যেভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। এ অনাকাঙ্ক্ষিত প্রবণতা নির্বাচন কমিশনকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। দেখে-শুনে মনে হচ্ছে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নির্বাচন কমিশনের মধ্যে গরজের ঘাটতি আছে। আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ পেলে নোটিস জারি করেই নিজেদের দায়িত্ব সারছেন নির্বাচন কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা। তফসিল ঘোষণার পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রার্থীদের পোস্টার-বিলবোর্ড অপসারণের কথা থাকলেও এখনো পোস্টারে ছেয়ে আছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর নির্বাচনী এলাকা। ঢাকার দক্ষিণ ও উত্তর সিটির দুই রিটার্নিং অফিসার আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে শুধু হুঁশিয়ারিই দিয়ে যাচ্ছেন। প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের মধ্যে অনীহা কাজ করছে বলে মনে হয়। দুর্বল প্রার্থীদের বিষয়ে কিছুটা কঠোর হলেও হেভিওয়েট প্রার্থীদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেননি রিটার্নিং অফিসাররা। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এ পর্যন্ত শতাধিক প্রার্থীকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থীদের আচরণবিধি তদারকিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগও করা হযেছে। তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। আগামী ৭ এপ্রিল থেকে তিন সিটিতে নির্বাচনী প্রচার শুরু করতে পারবেন প্রার্থীরা। নির্ধারিত সময়ের আগে কোনো প্রার্থীর প্রচারণা দৃষ্টিগোচর হলে তা সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১০ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। বিধিমালার ৯ বিধি অনুসারে কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন-পূর্ব সময়ে আচরণবিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনধিক ছয় মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়াও বিধি ১০ অনুসারে এ ধরনের অপরাধের জন্য নির্বাচন কমিশন যে কোনো প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে পারেন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের হাতে কড়া আইন থাকা সত্ত্বেও তা প্রয়োগের অভাবে প্রার্থীরা যা ইচ্ছা তাই করার সাহস পাচ্ছেন। এ ব্যাপারে সময় থাকতে কঠোর না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধেও নির্বাচন কমিশনকে উদ্যোগ নিতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের স্থানীয় বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে মন্ত্রী-এমপিদের তৎপরতায়ও বাদ সাধা দরকার।

সর্বশেষ খবর