শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

জনশক্তি রপ্তানি

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাণভোমরার ভূমিকা পালন করছে রেমিট্যান্স খাত। বিদেশে কর্মরত প্রায় ৮০ লাখ কর্মজীবী মানুষ পরিবার-পরিজনের জন্য যে অর্থ পাঠান তা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে সমৃদ্ধ করছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশকে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর শক্তি জোগাচ্ছে। বিদেশে বাংলাদেশের প্রধান শ্রমবাজার হিসেবে পরিগণিত সৌদি আরব। এর পরের অবস্থান ছিল মালয়েশিয়া ও আরব আমিরাত। ছয়-সাত বছর ধরে এসব দেশের জনশক্তি রপ্তানিতে ধস নেমেছে। প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে প্রধান তিন শ্রমবাজারে জনশক্তি রপ্তানি। আশার কথা, সৌদি আরবে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি আবারও জোরেশোরে শুরু হতে যাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানোর কূটনৈতিক যোগাযোগ চলছে। সৌদি আরবে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে ১ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতো। সরকারি হিসাবে বর্তমানে ওই দেশটিতে ১২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা অনেক বেশি। সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ায় আশা করা হচ্ছে সে দেশে প্রতি বছরই উল্লেখযোগ্য লোকের কর্মসংস্থান হবে। মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব ও আরব আমিরাতে ছয় বছর ধরে জনশক্তি রপ্তানিতে মন্দা গেলেও গত বছর ওমানে ১ লাখ ৫ হাজার ৫০০, কাতারে ৮৭ হাজার, বাহরাইনে ২৩ হাজার, লেবাননে ১৬ হাজার ৫০০ এবং জর্ডানে ২০ হাজার বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটেছে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ জনশক্তি রপ্তানি শুরুর পর এসব দেশে গত বছরই সর্বোচ্চ জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে। জনশক্তি রপ্তানি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্ফীত করাই শুধু নয়, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও অবদান রাখছে। বিদেশফেরত শ্রমজীবীরা দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পথিকৃতের ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছেন। আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। এ ধারা অব্যাহত রাখতে জনশক্তি রপ্তানিতে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার যে প্রয়াস চলছে তাও অব্যাহত রাখতে হবে।

সর্বশেষ খবর