রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

ব্যর্থ দলকে বাঁচিয়ে রাখতেই হবে?

সৈয়দ বোরহান কবীর

ব্যর্থ দলকে বাঁচিয়ে রাখতেই হবে?

সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে, প্রায় ২০০ মানুষকে পুড়িয়ে মেরে অবশেষে বিএনপি রণেভঙ্গ দিল। সিটি নির্বাচনের উৎসবের আমেজে বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটির শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপর্যুপরি দ্বিতীয় দফায় আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি সংগঠন হিসেবে আজ অস্তিত্বের হুমকিতে। এর ফলে রাজনীতির ভারসাম্য নষ্ট হবে কি না তা-ই এখন বড় প্রশ্ন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে শুরু থেকেই দুটি ধারা সমান্তরাল বহমান। আওয়ামী লীগ এবং অ্যান্টি আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের ব্যানারে অ্যান্টি আওয়ামী লীগ ধারা বিকশিত হয়। '৭৫-পরবর্তী সময় থেকে আওয়ামী লীগবিরোধীদের প্রধান সংগঠন বিএনপি। আওয়ামী লীগবিরোধী ভোটব্যাংকের প্রধান নিয়ন্ত্রক এখনো বিএনপি। তাই আন্দোলন লেজেগোবরে করে বিএনপি যখন অস্তিত্বের সংকটে তখন আমাদের সমাজের সুশীল সমাজের একটি বড় অংশ আর্তনাদ করে উঠছে। তারা হাহাকার করে বলছে, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন হলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হবে। গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত হবে। চিন্তার কথা! এক মাস ধরে বিভিন্ন লেখায়, টকশোয় অবিরাম বলা হচ্ছে- বিএনপিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, না হলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হবে।

আসলে কি তাই? আসলে কি রাজনৈতিক ভারসাম্যের জন্য বিএনপির বেঁচে থাকা জরুরি? এত ব্যর্থ একটি দলকে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে!

এক বুক আশা নিয়ে এ দেশের মানুষ ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল। কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্রের পত্তনের পরপরই বাঙালির মোহভঙ্গ ঘটে। বাঙালি বুঝতে পারে, এ রাষ্ট্র তাদের নয়। পাকিস্তানে অবাঙালি ধনিক শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে মুসলিম লীগ দ্রুত সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে থাকে। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আকাঙ্ক্ষা থেকে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন জন্ম নেয় বাংলাদেশ আওয়ামী মুসলিম লীগ। সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার ধারক সংগঠন হিসেবে দ্রুতই বিকশিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। ১৯৫৪ সালে হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট মাত্র সাত বছরের মাথায় মুসলিম লীগের কবর রচনা করে। বস্তুত ওই নির্বাচনের ভরাডুবির পর মুসলিম লীগ দল হিসেবে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। আস্তে আস্তে মুসলিম লীগ নামের দলটির নাম-নিশানা মুছে যায়। '৫৪-এর নির্বাচনের পর সে সময়ের অনেক বুদ্ধিজীবী এবং সুশীল আর্তনাদ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, 'পূর্ব পাকিস্তান' টিকিয়ে রাখতে হলে 'মুসলিম লীগ'-কে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু মুসলিম লীগের রাজনৈতিক ব্যর্থতা, অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের ফলে দলটি দ্রুতই জনগণের হৃদয় থেকে হারিয়ে যেতে থাকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বলেছেন, '১৯৪৭ সালে যে মুসলিম লীগকে লোকে পাগলের মতো সমর্থন করেছিল, সেই মুসলিম লীগ প্রার্থীর পরাজয়বরণ করতে হলো কী জন্য? কোটারী, কুশাসন, জুলুম-অত্যাচার এবং অর্থনৈতিক কোনো সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ না করার ফলে।' (অসমাপ্ত আত্মজীবনী, পৃষ্ঠা ১১৯)। অথচ '৫৬-তে এসে মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী ঘোষণা করেন, 'মুসলিম লীগকে ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে, মুসলিম লীগ ধ্বংস হলে পূর্ব পাকিস্তান ভারত হয়ে যাবে। পূর্ব পাকিস্তান হবে হিন্দুস্থান।' মুসলিম লীগের এসব দম্ভোক্তি এবং অপরিণামদর্শী নীতির পটভূমিতেই আওয়ামী মুসলিম লীগ (পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ) দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। '৭০-এর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মুসলিম লীগ নামক সংগঠনটি কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

কিন্তু বাংলাদেশে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠী ছিল, যারা আওয়ামী লীগবিরোধী। এদের অধিকাংশই ধনাঢ্য, জমিদার, জোতদার। উঁচু শ্রেণির বিপরীতে আওয়ামী লীগ খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক-শ্রমিক, জেলে-মজুরদের আস্থাস্থলে পরিণত হয়। '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধেও আমরা দেখি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল মৃত মুসলিম লীগ, জামায়াতসহ একটি গোষ্ঠী। এদের প্রতি ক্ষুদ্র হলেও একটি জনগোষ্ঠীর সমর্থন ছিল। গবেষণায় দেখা যায়, গ্রামীণ জোতদার, মহাজনদের একটা বড় অংশ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। স্বাধীনতাবিরোধী এ অংশটিই বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পর আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তি এবং মুসলিম লীগের বিকল্প হিসেবে নানা সময়ে নানা বর্ণে আত্মপ্রকাশ করে। স্বাধীনতার পরপরই জন্ম নেয় জাসদ। যদিও জাসদের মূল নেতৃত্বে ছিল জাতির পিতার ঘনিষ্ঠ ছাত্র এবং যুব নেতৃত্ব। কিন্তু ক্রমে জাসদে আওয়ামী লীগ বিরোধী অংশের পাল্লাই ভারী হতে থাকে। মহিউদ্দিন আহমেদ তার 'জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি' গ্রন্থে বলেছেন, '... এ সুযোগে পাকিস্তানপন্থি ও রাজাকারদের অনেকেই জাসদে জড়ো হতে থাকেন।' (পৃষ্ঠা : ১০৫)। কিন্তু রোমান্টিকতা আর বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের তারুণ্যের উদ্দীপনা স্থিত হয়ে পড়ে অচিরেই। সম্ভাবনা জাগিয়েও জাসদ আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হতে পারেনি।

'৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ড ছিল আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির যৌথ পৈশাচিকতার ফসল। '৭৫-এর পর জিয়া রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে এক প্লাটফর্মে দাঁড় করিয়ে নাম দেন 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল' (বিএনপি)। মূলত '৭৫-এর পর বিএনপিই হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগবিরোধী প্রধান মঞ্চ। এখানে যেমন স্বাধীনতাবিরোধী মুসলিম লীগের শাহ আজিজ ছিলেন, তেমনি ছিলেন আওয়ামী লীগের ওপর ক্ষুব্ধ বামপন্থি তরিকুল কিংবা মান্নান ভঁূইয়ার মতো নেতারা; আবার আওয়ামী লীগ থেকে পথভ্রষ্টরাও বিএনপির ছাতার নিচে জড়ো হন, যেমন কে এম ওবায়দুর রহমান। আওয়ামী লীগ, আরও নির্দিষ্ট করে বললে বঙ্গবন্ধুবিরোধী শক্তির সাংগঠনিক রূপ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বিএনপি। দ্রুতই আওয়ামী লীগবিরোধী ভোটব্যাংকের সিংহভাগ দখল করে বিএনপি। আওয়ামী লীগবিরোধিতার নামে বিএনপি কার্যত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধের ওপর আঘাত করে। সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র তুলে ফেলে। যুদ্ধাপরাধের প্রতীক গোলাম আযমকে বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেয়। '৭৫-এর হত্যাকারীদের বিচারের পথ বন্ধ করে আত্মস্বীকৃত খুনিদের কূটনৈতিক চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।

'৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর জিয়ার 'বাংলাদেশ লেবাসে পাকিস্তান' আদর্শ হোঁচট খায়। ক্ষমতায় আসেন এরশাদ। এরশাদ ছিলেন আদতে আদর্শহীন, দুর্নীতিবাজ এক শাসক; যার কাছে আদর্শের চেয়ে অর্থ ছিল মুখ্য। নীতি ও নৈতিকতার চেয়ে ভোগবিলাস ছিল আরাধ্য।

এরশাদের সামনে দুটি সুবর্ণ সুযোগ ছিল। এক. বিএনপির আওয়ামী লীগবিরোধী আদর্শের আবরণ নিজের গায়ে চড়ানো। দুই. আওয়ামী লীগপন্থি হয়ে আওয়ামী লীগকে দুর্বল করা। কিন্তু বাস্তবে এরশাদ কিছু বিএনপি কিছু আওয়ামী লীগ নিয়ে এক ধরনের 'ক্লীব' রাজনৈতিক দল গঠন করেন। যেটাকে আসলে দল না বলে ক্লাব বলাই ভালো।

জিয়ার মৃত্যুর পর বিএনপি বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরে নবজন্ম লাভ করে। '৮২ থেকে '৯০ সাল পর্যন্ত আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম জিয়া কেবল আওয়ামী লীগবিরোধী ভোটব্যাংককে সুরক্ষাই করেননি, সাধারণ মানুষের মধ্যেও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের ভাবমূর্তি নিয়ে আবির্ভূত হন। '৮৬-এর নির্বাচন বর্জন করে তিনি 'আপসহীন' নেত্রীর ইমেজ গ্রহণ করেন।

লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, এরশাদবিরোধী আন্দোলন বিএনপির একক আন্দোলন ছিল না। বিএনপি এ আন্দোলনে অনুসারীর ভূমিকা পালন করে। আওয়ামী লীগ এবং তার নেতৃত্বে বাম ও প্রগতিশীল শক্তিরা ছিল এরশাদবিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগে। বিএনপির নেতৃত্বে সাত দলীয় জোট ছিল আন্দোলনের সহযোগী। তিন জোটের আন্দোলনের ফলে '৯০-এর শেষে এরশাদের পতন হয়। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ডান ও দক্ষিণপন্থিদের (সহজভাবে বললে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী) প্রধান সংগঠন হিসেবে বিএনপি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের শক্তির অনৈক্য, আওয়ামী লীগের অতি আত্মবিশ্বাস এবং কোন্দলের ফলাফল '৯১-এর নির্বাচন। এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে জেলে আটকে বিএনপি ডান ও দক্ষিণপন্থি ভোট জড়ো করে। নির্বাচনের পর জামায়াতের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে বিএনপি।

বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং ভোটের অধিকারের দাবিতে একক আন্দোলন গড়ে তোলে। '৯৬ সালে আওয়ামী লীগ তার দাবি আদায় করে, বিএনপিকে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে পদত্যাগে বাধ্য করে।

বাংলাদেশের এক ঐতিহাসিক ইতিবাচক দিক হলো এ দেশের জনগণ। বাংলাদেশের জনগণ কখনো সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করে না। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি যত না অপশাসন এবং দুর্নীতি করেছে, তার চেয়ে বেশি করেছে জঙ্গিবাদের লালন। জঙ্গিবাদ এবং সাম্প্রদায়িক শক্তি বিএনপিকে গ্রাস করেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তার ইশতেহারে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আনুষ্ঠানিক অঙ্গীকার করে তখন মানুষ আর ফিরে তাকায়নি। '৭০-এর পর আবার বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়। আওয়ামী লীগ একাই দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হয়। ২০০১ সালে রাজনীতির যে ব্যবচ্ছেদ রেখা তৈরি হয়েছিল তা ২০০৮-এর পর থেকে ক্রমে স্পষ্ট হয়েছে। এখন চলছে চূড়ান্ত যুদ্ধের শেষ অঙ্ক।

মুসলিম লীগ যেমন জামায়াতের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, তেমনি বিএনপিও জঙ্গিবাদ, মৌলবাদের গর্ভে বিলীনপ্রায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপি যে আন্দোলন করেছে তা পুরোটাই জামায়াতনির্ভর। কিন্তু ওই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দলটি প্রথম এ সময় অস্তিত্বের সংকটে পড়ে। বিএনপিকে চালাচ্ছে এখন সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী শক্তি। তাদের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে বিএনপি দ্বিতীয় দফায় সরকারের পতনের ডাক দেয় এ বছর জানুয়ারি মাসে। ৫ জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ এবং সব কর্মদিবসে হরতালের কর্মসূচি দিয়ে বিএনপি সরকারের পতন ঘটানোর কৌশল নিয়েছিল। কিন্তু এ কৌশলে জনগণকে আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত না করে বিএনপিকে জঙ্গি সংগঠনের দিকে আরও এক পা বাড়িয়ে দিয়েছে। গত চার মাসে আন্দোলনকে কেবল তুলনা করা যায় আইএস, বোকো হারাম কিংবা আল-কায়েদার তৎপরতার সঙ্গে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, বিএনপির মৃত্যু হলে কী হবে। বিএনপিপন্থি অনেকে এখন আর্তনাদ করছেন। তারা বলছেন, বিএনপি যদি না থাকে তাহলে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটবে। কিন্তু তারা এটা বলছেন না, এখন বিএনপি জঙ্গিবাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত। জঙ্গিবাদীরা বিএনপিকে কুরে কুরে শকুনের মতো খেয়েছে। তাহলে আওয়ামী লীগবিরোধী প্রায় যে ৩০ শতাংশ মানুষ আছে তাদের কী হবে? তাদের পছন্দের দল কী হবে? অবশ্যই তা জাতীয় পার্টি হবে না। কারণ আদর্শিকভাবে জাতীয় পার্টি এখন আর আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ নয়। ইতিহাস বলে, শূন্যস্থান কখনো অপূর্ণ থাকে না। মুসলিম লীগের মৃত্যুর পর বিএনপির জন্ম হয়েছে। যতদিন বিএনপি মুখে হলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছে, ততদিন দলটি টিকে ছিল। এখন বিএনপি নামে যে দলটি আমরা দেখছি তা আসলে এক হিংস্র সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী সংগঠন। বিএনপির শবদেহে জঙ্গিবাদের জন্ম হয়েছে। কাজেই এ জঙ্গিবাদী বিএনপির উত্থান ঠেকাতে হলে প্রয়োজন একটি গণতান্ত্রিক মডারেট রাজনৈতিক বিন্যাস। বিএনপির মধ্যে এখনো অনেক বিবেকবান দেশপ্রেমিক আছেন, সিটি নির্বাচন সামনে রেখে তারা কী তেমন উদ্যোগ নেবেন? বাংলাদেশের রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, জাতির পিতার বিষয়গুলো থাক সবার ঊর্ধ্বে। বিতর্ক হোক উন্নয়নের কৌশল, অর্থনৈতিক নীতি নিয়ে। তেমন একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের উত্থান কী অসম্ভব?

লেখক : নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত

ই-মেইল : [email protected]

 

সর্বশেষ খবর