মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলানা মুহাম্মদ সাহেব আলী

মানুষ একে অন্যের ভাই। এক মানুষ অন্য মানুষের ওপর জুলুম চালাবে তা মানবিক চেতনার পরিপন্থী। ইসলাম সন্ত্রাসী ও অত্যাচারীর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। যারা এ ধরনের অপরাধে জড়িত তাদের জন্য অভিসম্পাতের কথা ঘোষণা করা হয়েছে কোরআনে। সমাজে যারা অত্যাচারী, যারা সন্ত্রাস, চুরি-ডাকাতি ও চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখাকেও ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে। কোরআনে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে একাধিক সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। যারা সন্ত্রাসে যুক্ত হয়, অন্যের ওপর অত্যাচার চালায় ইসলাম তাদের ঘৃণা করতে নির্দেশনা দিয়েছে।

অত্যাচারের পাশাপাশি অত্যাচারীর সহায়ক হওয়া, তার সঙ্গে মেলামেশা করাও আল্লাহ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছেন। সুরা হুদে বলা হয়েছে : 'তোমরা অত্যাচারীদের দিকে ঝুঁকে পড়ো না, তাহলে তোমাদেরও আগুন স্পর্শ করবে। এ অবস্থায় আল্লাহ ছাড়া তোমাদের আর কোনো অভিভাবক থাকবে না। তোমাদের কোনোরূপ সাহায্যও করা হবে না।' এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, অত্যাচারীদের সঙ্গে হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে তুলো না, তাদের সঙ্গে কোমল ও বিনম্র ভাষায় কথা বলো না, তাদের সঙ্গে ভালোবাসার বন্ধনে জুড়ো না। সুদ্দি ও ইবনে জায়দ বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, অত্যাচারীদের প্রশংসা করে আপস করো না। ইকরিমা বলেন, আপ্যায়ন ও প্রীতি প্রদর্শন করে তাদের অনুগত হয়ো না। আবুল আলিয়া বলেন, অত্যাচারীর অত্যাচার খুশিমনে অনুমোদন করো না। 'তোমাদেরও আগুন স্পর্শ করবে' অর্থ হচ্ছে অগি্নতাপ তোমাদের ওপরও বর্ষিত হবে। 'আল্লাহ ছাড়া তোমাদের আর কোনো অভিভাবক থাকবে না'- এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহর শাস্তি থেকে তোমাদের মুক্তি দিতে পারে এমন কেউ থাকবে না। 'তোমাদের সাহায্য করা হবে না' অর্থ আল্লাহর শাস্তি থেকে তোমাদের নাজাত দেওয়া হবে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ ফেরেশতাদের এই বলে নির্দেশ দেবেন : 'অত্যাচারী ও তাদের সহযোগীদের সমবেত কর।' সুরা সাফফাত, আয়াত ২২। অর্থাৎ অত্যাচারীকে সহায়তাকারী এবং অত্যাচারের সমর্থন ও অনুমোদন দানকারীও অত্যাচারীর সঙ্গে একই পরিণতির সম্মুখীন হবে। কোরআনের বিভিন্ন আয়াত ও রসুল (সা.)-এর হাদিসের আলোকে সন্ত্রাসী বা মানুষের ওপর জুলুমকারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা মুমিনের কর্তব্য হিসেবে বিবেচিত। যারা সন্ত্রাস এবং সামাজিক অশান্তি সৃষ্টিতে লিপ্ত তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করাও আমাদের কর্তব্য। আল্লাহ আমাদের সন্ত্রাসী বা জালিমদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার তওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : ইসলামী গবেষক

 

 

সর্বশেষ খবর