শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

সবজি রপ্তানি হুমকির মুখে

গার্মেন্টের পর বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্যের নাম সবজি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ খাতটির প্রতি নজর দিলে সবজি রপ্তানি বাবদ আয়ের দিক থেকে গার্মেন্ট খাতকেও পেছনে ফেলা সম্ভব হবে। সবজি রপ্তানি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেওয়া গেলে দেশের কৃষকদের জীবনযাত্রার মানে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। দরিদ্রতার অভিশাপ কাটিয়ে ওঠারও সুযোগ পাবে তারা। কিন্তু সবজি রপ্তানির ক্ষেত্রে জালিয়াতির ঘটনা এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে অষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় সবজি রপ্তানির ক্ষেত্রে ক্ষতিকর জীবাণু বা বিষাক্ত কোনো উপাদান নেই সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হয়। বাংলাদেশ থেকে সবজি রপ্তানির ক্ষেত্রে সেগুলো যে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত এ সম্পর্কে সার্টিফিকেট দিতে হয়। বলা বাহুল্য, সবজি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই সার্টিফিকেট দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু রপ্তানিকারকরা অনেক ক্ষেত্রে নিয়মনীতি যথাযথভাবে পালন করেন না এমন অভিযোগ প্রবল। ইউরোপীয় কমিশন সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, সবজি রপ্তানির ক্ষেত্রে ভুয়া সার্টিফিকেট ব্যবহারের প্রতারণা বন্ধ না হলে তারা যে কোনো সময় বাংলাদেশ থেকে সবজি নেওয়া বন্ধ করে দেবেন। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে এমন অনেক সবজির চালান ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশে পাঠানো হয়েছে, যা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ক্ষতিকর জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার কারণে ইসিভুক্ত দেশগুলোতে বাংলাদেশের পান রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাংলাদেশের রপ্তানিকৃত পান ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত কিনা সে সম্পর্কে তারা লিখিত তথ্য-প্রমাণও চেয়েছে। সাফ সাফ বলে দেওয়া হয়েছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে এ সম্পর্কিত প্রমাণাদি পাঠাতে না পারলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হবে। বাংলাদেশের সবজির স্বাদ দুনিয়ার যে কোনো দেশের চেয়ে ভালো। উৎপাদন খরচও অপেক্ষাকৃত কম। বিদেশে অবস্থানরত ৮০ লাখ প্রবাসীর কাছে দেশি সবজির কদরই বেশি। সবজি রপ্তানির মাধ্যমে কয়েক বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ থাকলেও এ খাতটির প্রতি সেভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে না। খাদ্যপণ্যের প্রতি ইউরোপ-আমেরিকার মানুষ সংবেদনশীল। সবজি রপ্তানিতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে হলে তাদের আস্থা অর্জনে নজর দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর