শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য

রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য হঠাৎ করেই বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রীষ্মের দাবদাহ এ প্রতারক দলের জন্য পোয়াবারো হয়ে দেখা দিয়েছে। এ সময় ডাব, শরবত, তরমুজ, শসা, আইসক্রিমের চাহিদা থাকে বেশি। এসব পানীয় ও খাদ্যের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান পার্টির সংঘবদ্ধ সদস্যরা বাস, ট্রেন ও লঞ্চের যাত্রীদের ঘায়েল করে। তারপর তাদের অর্থ ও মালামাল নিয়ে কেটে পড়ে। কখনো কখনো অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেফতার করা হলেও আইনের ফাঁক গলিয়ে তারা প্রায়ই বেরিয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একশ্রেণির অসৎ সদস্য এদের সহায়- এমন অভিযোগও ওপেন সিক্রেট। ফলে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এ চক্রের সদস্যরা। বাস, লঞ্চ ও ট্রেন টার্মিনাল এবং অন্যান্য কর্মব্যস্ত এলাকায় হকার সেজে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছে তারা। আর এসব খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে চেতনানাশক ওষুধ। এগুলো কিনে কেউ খেলেই জ্ঞান হারাচ্ছেন। কখনো কখনো চেতনানাশকের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে ওই খাবার খেয়ে প্রতারিতরা মারাও যাচ্ছেন। যাত্রীবেশে পাশে বসে যানবাহনের যাত্রীকে কিছু খাইয়ে সর্বস্ব লুটে নেওয়া এদের পুরনো কৌশল। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, প্রতিদিনই এসব চক্রের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। গত ২০ দিনে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে কেবল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৫ জন। রাজধানীর বাস, লঞ্চ ও রেলস্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ ৪০টি পয়েন্টে অজ্ঞান পার্টির শতাধিক গ্রুপ সক্রিয়। তারা ফেরিওয়ালা সেজে সহজ-সরল মানুষকে ফাঁদে ফেলার জন্য জুস, ডাবের পানি, খেজুর, ঝাল-মুড়ি, শরবত ইত্যাদি বিক্রি করছে। প্রতারিতরা এসব খেয়ে সর্বস্ব হারানোর পাশাপাশি জীবন হারানোর মতো ঝুঁকিতে পড়ছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ধরার ব্যাপারে তাদের উদ্যোগের অভাব নেই। তবে পুলিশের একার পক্ষে তাদের সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে সাধারণ যাত্রীদেরও সতর্ক হতে হবে। অপরিচিত লোকের কাছ থেকে কোনো কিছু খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারটি নিশ্চিত হলে তাদের কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে আসবে। অপরাধ দমনে জনসচেতনতার যে বিকল্প নেই এটি একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। এর পাশাপাশি অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা আইনের ফাঁক গলিয়ে যাতে ছাড়া না পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর