সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভূমিকম্পের ঝুঁকি

পর পর দুদিন মৃদু থেকে মাঝারি মাপের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল পুরো বাংলাদেশ। হিমালয়কন্যা নেপালে সৃষ্ট এ ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেছে সে দেশের বেশকিছু জনপদ। অন্তত দুই হাজার মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতেও পড়েছে এ ভূমিকম্পের অশুভ প্রভাব। যার কারণে অন্তত ৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বাংলাদেশে ভূমিকম্পের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম পড়লেও আতঙ্ক ও হুড়াহুড়ির শিকার হয়ে নিভে গেছে তিনটি প্রাণ। ভূমিকম্পপ্রবণ রেখায় বাংলাদেশের অবস্থান হলেও এ দেশে ভূমিকম্পের আশঙ্কা কতটুকু বিশেষজ্ঞদের মধ্যে তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, বাংলাদেশে বড় মাপের ভূমিকম্পের আশঙ্কা নেই বললেই চলে। দেশের ভেতরে ভূমিকম্প সৃষ্টির মতো যেসব ভূগর্ভস্থ ফাটল ছিল সেগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় মাঝারি ও তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা আপাতত নেই। তবে প্রতিবেশী ভারত, মিয়ানমার ও নেপালে তীব্র ভূমিকম্প হওয়ার মতো ভূগর্ভস্থ ফাটল থাকায় তা বাংলাদেশের জন্য আশঙ্কার কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে ৮ থেকে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প হলে বাংলাদেশে মাঝারি মাপের কম্পন অনুভূত হবে। বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করা হলে মাঝারি মাপের ভূমিকম্প নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই। কিন্তু রাজধানীর বেশিরভাগ ভবনের নির্মাণশৈলী নিয়ে সংশয় থাকায় এ ধরনের ভূমিকম্পেও বিপর্যয় ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা কম নয়। শনি ও রবিবারের মৃদু ও মাঝারি মাপের ভূমিকম্পে রাজধানীর বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাড়াহুড়া আতঙ্কে সারা দেশে মারা গেছে অন্তত তিনজন। ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় যথাযথ প্রস্তুতি না থাকলে মাঝারি মাপের ভূমিকম্পেও যে বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে গত দুই দিনের ভূকম্পনে তা অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্প এমন একটি দুর্যোগ তা প্রতিরোধের উপায় মানুষের এখনো অজানা। এ দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষমতাও এখনো মানুষ আয়ত্তে আনতে পারেনি। সেহেতু দুর্যোগ নেমে এলে ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে কমানো যায় এবং উদ্ধার কাজ কীভাবে চালানো যায় সেদিকেই আমাদের প্রস্তুতি থাকতে হবে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রশংসার দাবিদার হলেও ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে। অস্তিত্বের স্বার্থে এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।

সর্বশেষ খবর