শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের হালহকিকত

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং অব্যবস্থাপনা এ দুটি দুনিয়াজুড়েই সমার্থক শব্দ হিসেবে বিবেচিত। সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আমাদের দেশে প্রচলিত একটি তির্যক প্রবচনও এ প্রসঙ্গে স্মর্তব্য। প্রবচনটি হলো 'কোম্পানিকা মাল দরিয়ামে ঢাল।' সরকারি প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করেন তাদের দায়বোধের কিম্ভূতকার চিত্রই ফুটে উঠেছে প্রচলিত এ প্রবচনে। বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর হতশ্রী ছবিই তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোয় পদ থাকলেও সেসব পদে নেই প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা। ফলে দীর্ঘদিন ধরে শূন্যপদ নিয়ে খুঁড়িয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেক প্রতিষ্ঠানের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। সরকারি পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ২৮০টি প্রতিষ্ঠানে পদ শূন্য রয়েছে ৯১ হাজার ২৯৩ জনের। এসব প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত জনবলের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭৪ হলেও কর্মরত আছেন ২ লাখ ৬৫ হাজার ২৮১ জন। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে পদ খালি থাকলেও সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতায় শূন্যপদ পূরণ হচ্ছে না। এর ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা বাড়াতে পারছে না। জনবলের অভাবে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে না পারায় দিনে দিনে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছে। তাদের মতে, এসব প্রতিষ্ঠানের জনবল সমস্যার চেয়ে দক্ষতার অভাবই বড় সমস্যা। দক্ষতা বাড়িয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান লোকসানি থেকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোয় এমন অনেক পদ রয়েছে যা অপ্রয়োজনীয়। অনেক পদে নিয়োজিতরা কাজ না করেই সব সরকারি সুবিধা নিচ্ছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আর অব্যবস্থাপনা সমার্থক শব্দ হয়ে ওঠায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পেয়েও এগুলো লাভের মুখ দেখতে পারছে না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মী নিয়োগে যোগ্যতার বদলে উৎকোচ দানের ক্ষমতাই প্রাধান্য পায়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি বাসা বাঁধায় সুনীতি এসব প্রতিষ্ঠান থেকে নির্বাসিত হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো দেশবাসীর ট্যাক্সে টাকা অপচয়ের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হওয়ায় এগুলোর বেসরকারিকরণের দিকে নজর দিতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার সাহসী ভূমিকা নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

সর্বশেষ খবর