সোমবার, ৪ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

নকল-ভেজাল ওষুধ

বিশ্বে ওষুধের বাজারে বাংলাদেশি মানসম্মত ওষুধ যখন আপন যোগ্যতায় স্থান করে নিচ্ছে, তখন সারা দেশে চলছে নকল-ভেজাল ওষুধের অবাধ রাজত্ব। কমিশন লাভের আশায় চিকিৎসকদের একাংশ ভুঁইফোড় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির মানহীন ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের জন্য লিখে দিচ্ছেন। দেশে ওষুধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত কোম্পানির সংখ্যা ২৭০-এর বেশি। এর মধ্যে সর্বাধিক ৪০টি কোম্পানি মানসম্মত ওষুধ তৈরি করলেও অন্যদের উৎপাদিত ওষুধ কতটা মানসম্মত তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচারে বিধিনিষেধ থাকায় কোনটি মানসম্মত ওষুধ তা ভোক্তাদের অজানা থেকে যাচ্ছে। রাজধানী ও নগর এলাকার চিকিৎসকরা তাদের ব্যবস্থাপত্রে মানসম্মত কোম্পানির ওষুধ দিলেও মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলোর ভরসা হাতুড়ে চিকিৎসকরা। তাদের কারণে মফস্বল এলাকার বাজারগুলো মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলোর দখলে। বাংলাদেশের ওষুধ ইউরোপ-আমেরিকায় রপ্তানি হলেও এখন মানসম্মত ওষুধ কোম্পানির ওষুধ ব্যবহার করেও স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কোম্পানির ওষুধও অবাধে নকল করছে সুসংঘবদ্ধ একাধিক চক্র। এ নকল প্রক্রিয়ার হোতাদের পেছনে অসৎ রাজনীতিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ওষুধ প্রশাসনের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশ থাকায় তাদের আইনের আওতায় আনা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ফলে তারা প্রকাশ্যে তাদের জালিয়াতির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নকল ওষুধ তৈরির জন্য মাঝে-মধ্যে জালিয়াত চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হলেও তাদের আটকে রাখা যায় না। অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলিয়ে আবারও জড়িত হয় নকল-ভেজালের কাজে। সংসদীয় কমিটি কয়েক মাস আগে ৭৩টি ওষুধ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করলেও তাদের বিরুদ্ধে এখনো যুতসই কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ওষুধের জন্য উদার বিজ্ঞাপননীতি না থাকায় গুটিকয়েক কোম্পানি জীবনরক্ষাকারী ওষুধের পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় ওষুধের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থার অবসানে ওষুধের বিজ্ঞাপন প্রচারে উদারনীতি গ্রহণ করতে হবে। মনোপলির অবসান ঘটিয়ে জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর