রবিবার, ২৪ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

পদ্মা সেতুর কর্মযজ্ঞ

পদ্মা সেতু স্বপ্ন থেকে বাস্তবতায় পরিণত হবে আগামী তিন বছরের মধ্যে। ছয় মাসের কাজ ছয় বছরেও শেষ না হওয়ার দুর্নাম যে দেশের সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে অহরহ ঘটছে, সে দেশে পদ্মা সেতু প্রকল্প ব্যতিক্রমের দাবিদার। প্রাকৃতিক এবং রাজনৈতিক দুর্যোগ সবকিছু উপেক্ষা করে এগিয়ে চলছে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ। কাজের অগ্রগতি যেভাবে এগিয়ে চলছে তাতে আশা করা হচ্ছে, নির্ধারিত সময়ের আগেই স্বপ্নের এ সেতু চালু করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সেতুর বাস্তবায়নে রাত-দিন পরিশ্রম করছেন তিন হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে চলছে মহা-কর্মযজ্ঞ। প্রখর রোদ ও নদীপাড়ের তপ্তবালুর দাহ উপেক্ষা করে কাজ করে চলেছেন শ্রমিকরা। বালুর ওপর বড় ছাতা পেতে কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। সেতুর টেস্ট পাইলিংয়ের প্রথমটির কাজ প্রায় শেষের পথে। ২৬ মে এই টেস্ট পাইলিংয়ের লোড টেস্ট বা ভর পরীক্ষা করা হবে। সব মিলিয়ে ২৬টি টেস্ট পাইলিং করা হচ্ছে, এর মধ্যে ১০টি স্টিল পাইলিং এবং ১৬টি বোর্ড পাইলিং। সেতু তৈরির কাজে ব্যবহারের জন্য জার্মানি থেকে আমদানিকৃত প্রায় আড়াই হাজার টনের হ্যামার মংলা থেকে মাওয়ায় আনা হচ্ছে। আগামী অক্টোবরেই শুরু হবে সেতুর মূল পাইলিংয়ের কাজ। আর খুঁটির ওপর সেতুর স্প্যান বসানো শুরু হবে আগামী বছরের মে মাসে। ২০১৮ সালে স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর জন্য নদীপাড় জুড়ে যে কর্মযজ্ঞ চলছে তা এক আশাজাগানিয়া ঘটনা। এ কর্মযজ্ঞের কারণে পদ্মাপাড়ের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে উৎসবের আমেজ। পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হলে শুধু যোগাযোগেই নয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিতে তাৎপর্যময় অবদান রাখবে। সেতুটি নির্মিত হলে দেশের জিডিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। মানুষের আয় ১ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ৭ লাখ ৪৩ হাজার মানুষের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণের কর্মযজ্ঞ প্রমাণ করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নে সদিচ্ছার বিকল্প নেই। সরকার চাইলে সব উন্নয়ন প্রকল্পই রুটিন অনুযায়ী সম্পন্ন করা সম্ভব। এ জন্য দরকার দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং তা বাস্তবায়নের আপসহীন মনোভাব।

সর্বশেষ খবর