সোমবার, ২৫ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

পরিবহন ধর্মঘট

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের ঐক্য পরিষদ তাদের দাবি আদায়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে পরিবহন ধর্মঘট পালন করছে। তারা হুমকি দিয়েছে দাবি না মানা হলে সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে। পরিবহন মালিক কিংবা শ্রমিকরা পেশাগত দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নামতেই পারেন। সংবিধানে নাগরিকদের ধর্মঘট পালনের অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের চলমান ধর্মঘট সে দিক থেকেও গ্রহণযোগ্য কিনা তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। ফরিদপুরের মধুখালীতে গত ১৮ মে সোহাগ পরিবহনের বেনাপোলগামী নৈশকোচে ডাকাতির পর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসের চালক ও তার সহকারীকে আটক করলে মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। সোহাগ পরিবহনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় ডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে চালক ও তার সহকারীকে আটক করা হয়। পরিবহন ডাকাতির সঙ্গে কখনো কখনো চালক কিংবা তার সহকারীর যোগসাজশ থাকে এমন অভিযোগ প্রায়শই শোনা যায়। পুলিশের কাছে চালক এবং তার সহকারীকে সন্দেহভাজন মনে হলে তারা তাদের গ্রেফতার দেখাতেই পারে। তবে হয়রানির জন্য চালক ও তার সহকারীকে আটক করা হলে সেটি হবে দুর্ভাগ্যজনক। স্বীকার করতেই হবে দেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে এ ধরনের প্রবণতা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে যা সাধারণ্যে 'গ্রেফতার বাণিজ্য' হিসেবে পরিচিত। মধুখালীর ঘটনা তেমন ধরনের কিনা তা কেবল যথাযথ তদন্তেই উদ্ঘাটিত হতে পারে। যে কারণেই হোক না কেন পরিবহন ধর্মঘট দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য ভোগান্তির কারণ সৃষ্টি করেছে। পরিবহন মালিক, শ্রমিক এবং তাদের বিপরীতে পুলিশের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের কোনো পক্ষে সাধারণ যাত্রীরা না থাকলেও ধর্মঘটের টার্গেটে পরিণত হচ্ছে তারা। কথায় কথায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের ধর্মঘট ডাকা একটি চিরচেনা প্রবণতা। দেশের আইন-আদালত সব কিছুর ঊর্ধ্বে নিজেদের ভাবার একটি অসুস্থ মানসিকতাও রয়েছে তাদের কারও কারও মধ্যে। যা কোনোভাবেই বাঞ্ছিত নয়। আমরা আশা করব, জনস্বার্থে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে। আটক চালক ও তার সহকারী অপরাধী না হলে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর