মঙ্গলবার, ২৬ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

মালয়েশিয়ায়ও গণকবর

থাইল্যান্ডের পর মালয়েশিয়ায়ও আবিষ্কৃত হয়েছে অভিবাসীদের বিপুলসংখ্যক গণকবর। এসব গণকবরের একটিতে প্রায় ১০০ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গার হাড়গোড় পাওয়া গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, গণকবরগুলোতে কয়েক হাজার অভিবাসীকে হত্যার পর কবর দেওয়া হয়েছে। হতভাগ্য অভিবাসীদের অপরাধ মানব পাচারকারী চক্রের দাবি অনুযায়ী তাদের আত্দীয়স্বজন মুক্তিপণ দিতে পারেনি। অনেক সময় মুক্তিপণ আদায়ের পরও আটক অভিবাসীকে হত্যা করা হয়েছে ঝুট-ঝামেলা এড়ানোর জন্য। মানব পাচারকারীদের কবল থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময়ও কাউকে কাউকে প্রাণ দিতে হয়েছে। থাইল্যান্ড সীমান্তে মালয়েশিয়ার মধ্যে পাচারকারীদের ১৭টি পরিত্যক্ত ক্যাম্পের কাছে আবিষ্কৃত হয়েছে এ পর্যন্ত ৩০টি গণকবর। মালয়েশিয়া পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন গণকবরগুলো অবৈধ অভিবাসীদের। মালয়েশিয়ায় ৩০টি গণকবর আবিষ্কৃত হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করেছে পাচারকারী চক্রের কবলে পড়ে যেসব রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি সাগর পথে মালয়েশিয়ায় গেছে তাদের এক উল্লেখযোগ্য অংশকে বেঘোরে প্রাণ দিতে হয়েছে। তাদের অনেকেই এখন থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় ক্রীতদাসের জীবনযাপন করছেন। মালয়েশিয়ার থাই সীমান্তবর্তী যে এলাকায় মানব পাচারকারীদের পরিত্যক্ত ক্যাম্পগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে সংরক্ষিত এ এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার ছিল না। প্রশ্ন উঠতেই পারে, মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের অজান্তে এমন ক্যাম্প কীভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল? নাকি এর সঙ্গে তাদেরও কোনো সম্পর্ক ছিল? মালয়েশিয়া তাদের দেশে মানব পাচারকারীদের কোনো ক্যাম্প নেই বলে এতকাল দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত অবৈধ ক্যাম্পগুলোর বিরুদ্ধে তারা যে অভিযান চালাচ্ছে এটি একটি আশাজাগানিয়া ঘটনা। আমরা আশা করব সত্যকে অস্বীকার করা নয়, মানব পাচারের ঘটনা বন্ধে এ অঞ্চলের সব দেশ একসঙ্গে ভূমিকা পালন করবে। মানবতার স্বার্থে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত রাঘববোয়ালদের বিচারের সম্মুখীন করতে এগিয়ে আসবে। মানব পাচারের ঘটনা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ভাবমূর্তিতে যে আঘাত করেছে, তা পুনর্গঠনে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কড়া হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর