মঙ্গলবার, ২৬ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইতিহাস

খলজির শাসনব্যবস্থা

আলাউদ্দীন খলজি কেবল বিখ্যাত যোদ্ধা ও বিজেতাই ছিলেন না, তিনি একজন শ্রেষ্ঠ শাসকও ছিলেন। তার সাংগঠনিক প্রতিভা বিজেতার কৃতিত্বকে ম্লান করে দিয়েছে। মোগলদের শাসনামলের আগে আলাউদ্দীন খলজির নাম অন্য কেউ রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপের সংগঠন ব্যবস্থায় এত বেশি মনোযোগী হননি। স্বৈরতন্ত্র ও একনায়কত্বকে ভিত্তি করে তিনি একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। শাসনকার্যের ব্যাপারে সুলতান আলাউদ্দীন খলজি ভিন্নমুখী মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি নিজেকে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বলে মনে করতেন। তার মতে, সুলতান সব ক্ষমতার উৎস এবং তাকে বিরোধিতা করার বৈধ অধিকার কারও নেই। তিনি শাসনকার্যের ব্যাপারে ধর্মীয় অনুশাসনকে প্রাধান্য দিতেন না। তিনি বিশ্বাস করতেন, ধর্মকে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্র থেকে পৃথক রাখা উচিত। তাই তিনি ঘোষণা করেন, 'কোন আইন শরিয়ত মোতাবেক অথবা শরীয়তবিরোধী তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই; আমার চিন্তা শাসন সংক্রান্ত ব্যাপারে তা কতখানি কার্যকর হবে।' তিনি বিশ্বাস করতেন, তিনি যা করেন তা সালতানাতের স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা বিধানের জন্যই করেন, নিজের সুখ-সুুবিধার জন্য নয়। সালতানাতের স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা বিধান এবং নিজের শাসনব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করতে তিনি ইচ্ছানুযায়ী যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষপাতী। সুলতানের এরূপ চিন্তাধারা লক্ষ্য করে অনেকে তাকে ধর্মের প্রতি অবজ্ঞাকারী হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। বারানী ও তার অনুসারীরা তার অনৈসলামিক চিন্তাধারার সমালেচনা করেছেন। অন্যদিকে আমির খসরু ও ইসামী আলাউদ্দীন খলজিকে ইসলাম ধর্মের একজন সমর্থক বলে উল্লেখ করেন।

সর্বশেষ খবর