বৃহস্পতিবার, ২৮ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

ন্যায্য বাণিজ্য : নিজেই কি দাতব্য বাণিজ্যের নিষ্ঠুর শিকার?

তুষার কণা খোন্দকার

ন্যায্য বাণিজ্য : নিজেই কি দাতব্য বাণিজ্যের নিষ্ঠুর শিকার?

মে মাসের দ্বিতীয় শনিবার ছিল বিশ্ব ন্যায্য বাণিজ্য দিবস। এ বছরের ৯ মে পৃথিবীর অনেক জায়গায় দিনটি গুরুত্ব দিয়ে পালিত হয়েছে। বাংলাদেশে যেখানে ন্যায্য বাণিজ্য শব্দটি প্রায় অপরিচিত সেখানে দিনটি নিঃশব্দে এসে বিদায় নিয়েছে। ন্যায্য বাণিজ্যের ইতিহাস এবং ন্যায্য বাণিজ্যের চর্চা সম্পর্কে যারা ওয়াকিবহাল তাদের জন্য বিষয়টি দুঃখজনক। ন্যায্য বাণিজ্যের ধারণাকে পুঁজি করে বাংলাদেশে গুটিকয়েক মানুষ বাণিজ্য এবং দাতব্যের ব্যবসা করলেও ন্যায্য বাণিজ্যের মূল উদ্দেশ্য আজও চরমভাবে অবহেলিত রয়ে গেছে। ন্যায্য বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজন কোনো এক অজ্ঞাত কারণে ন্যায্য বাণিজ্যের ১০ নীতি গণমানুষের জানা-বোঝার জন্য কখনোই উন্মুক্ত করেননি।

'বাণিজ্যে বসত লক্ষ্মী' এ কথা সবাই আমরা জানি। কিন্তু বাণিজ্য লক্ষ্মীর বসত কার ঘরে সে প্রশ্ন ইউরোপে অনেক আগেই জন্ম নিয়েছে। বাণিজ্যের ধাপে ধাপে যত মানুষের সংশ্লিষ্টতা তারা সবাই কি বাণিজ্য লক্ষ্মীর ছোঁয়া পায়? বাণিজ্যের বেসাতি যারা এক দেশ থেকে বয়ে আরেক দেশে নিয়ে এসে বাজারজাত করে বাণিজ্যের লাভ পুরোটা তারা গ্রাস করে ফেলে না তো? বাজারে যে সব পণ্য পাওয়া যায় সে সব পণ্য তৈরির ধাপে ধাপে যে মানুষগুলোর শ্রম ঘাম মিশে আছে তারা কি বাণিজ্যের লাভের ভাগিদার হতে পারছে? ইউরোপের কিছু মানুষ চড়া দামে পণ্য কিনতে কিনতে তিতি বিরক্ত হয়ে এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে বেরিয়েছিল। ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করার উদ্দেশ্য নিয়ে তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে তারা কেঁচো খুঁড়তে সাপের সন্ধান পেলেন। আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার কফি এবং কলা চাষিরা কি চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে আছে সেই চিত্র দেখে তারা বুঝলেন বাণিজ্যের লাভ কে খাচ্ছে।। আমাদের দেশের চা শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার দিকে তাকালে আফ্রিকা এবং ল্যাটিন আমেরিকার কফি এবং কলা চাষিদের জীবনমান নিয়ে সহজে ধারণা করা যেতে পারে।

ইউরোপের কয়েকটি দেশে এবং আমেরিকায় ন্যায্য বাণিজ্যের ধারণা বহু আগে জন্ম নিয়েছে। গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিকল্প বাণিজ্য Alternative Trading Organizations (ATO) নামে ন্যায্য বাণিজ্য সংগঠনের জন্ম হলেও সমাজ এবং অর্থনীতি নিয়ে যারা ভাবনাচিন্তা করত তাদের মধ্যে বাণিজ্যের ন্যায্যতা এবং অন্যায্যতা নিয়ে অনেক আগেই আলোচনা ছিল। আঠারশ শতাব্দীতে ই পি থম্পসন পণ্যের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে হাত বদলের ধাপে ধাপে লুকিয়ে থাকা বাড়তি মূল্যকে ভোক্তার জন্য অকারণ সংকট বলে চিহ্নিত করেছিলেন। থম্পসন কাজটি করেছিলেন ভোক্তার মুখ চেয়ে। পণ্যের মূল্য নির্ধারণে মধ্যস্বত্বভোগীদের অতিমুনাফা চিহ্নিত করে তিনি ভোক্তার জন্য পণ্যটি সস্তা এবং সহজলভ্য করার ধারণা নিয়ে কাজ করেছিলেন। ভোক্তার পাশাপাশি উৎপাদকের বঞ্চনার দিক তখনো উপেক্ষিত ছিল। ১৮২৭ সালে আমেকিার ফিলাডেলফিয়ায় থমাস ম্যাকক্লিনটক তার সমচিন্তার মানুষদের নিয়ে Free Produce Movement শুরু করেছিলেন যেটাকে দাসপ্রথার বিরুদ্ধে নৈতিক আন্দোলনের সূচনা বলে ধরে নেওয়া যায়। আবার ম্যাকক্লিনটকের Free Produce Movement-কে ন্যায্য বাণিজ্য আন্দোলনের মৌলিক ভিত্তি বলে গ্রহণ করাই যুক্তিযুক্ত বলে আমি বিশ্বাস করি। তার আন্দোলনের ধারণার মধ্যে ভোক্তার চেয়ে উৎপাদক অনেক বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। সে সময় আমেরিকায় তামাক এবং তুলা চাষে সবচেয়ে বেশি দাস শ্রমিক ব্যবহার করা হতো। দাস শ্রমিক ব্যবহার করে যারা তুলা এবং তামাক উৎপাদন করত তাদের নিরুৎসাহিত করার জন্য Free Produce Movement তুলা এবং তামাক উৎপাদনকারী শ্রমিকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাগিদ দিতে শুরু করলেন। সে সময় দাসপ্রথার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাজনীতির বাইরে এটি একটি নতুন হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছিল। এরপর ১৮৫৯ সালে ডাচ লেখক এডওয়ার্ড ডাউভেস ডেকার তার উপন্যাস মাঙ্ হ্যাভেলার নিয়ে সমাজের সামনে এসে দাঁড়ালেন। উপন্যাসের নায়ক নেদারল্যান্ডের বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ম্যাক্স হ্যাভেলার ডাচ কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দিয়ে তৎকালীন ডাচ কলোনি ইন্দোনেশিয়ান কর্মচারীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। ম্যাক্স হ্যাভেলার নামটি উপন্যাসের নায়ক হলেও এই কল্পিত চরিত্রটি বাণিজ্যের ভিতরে ন্যায্যতার পক্ষে একটি অনন্য উদাহরণ বলে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ন্যায্য বাণিজ্যের ধারণা একটি অর্থনৈতিক মতবাদ, ইতিবাচক সামাজিক মূল্যবোধ এবং ধারালো রাজনৈতিক ধারণা- এই তিনের সমন্বয়ে অবয়ব নিতে শুরু করেছিল। ন্যায্য বাণিজ্যের ধারণাকে তখনো ধর্মের বালাই গ্রাস করে সারেনি। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ন্যায্য বাণিজ্য রাজনৈতিক সচেতনতার গণ্ডি পেরিয়ে ধর্মের খোলস গায়ে চড়াতে শুরু করল। সে সময় কয়েকটি খ্রিস্টধর্মভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ন্যায্য বাণিজ্যের স্লোগানকে খ্রিস্টধর্মের অংশ হিসেবে প্রচার করতে শুরু করেছিল। সেই সঙ্গে ন্যায্য বাণিজ্যের মতো একটি চোখা সরল সত্যকে বাণিজ্যিক দুনিয়া থেকে সরিয়ে এটিকে দাতব্য দুনিয়ার অংশে পরিণত করেছিল, যে অবস্থা থেকে আজও ন্যায্য বাণিজ্য মুক্ত হতে পারেনি।

ষাটের দশকে ন্যায্য বাণিজ্যের আধুনিক ধারণা পুঁজিবাদী সমাজে ভিন্নমাত্রায় আকৃতি নিতে শুরু করে। শীতল যুদ্ধের দিনগুলোতে নব্য সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ন্যায্য বাণিজ্যের স্লোগান ব্যবহার করা হলেও ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে এটাকে উৎপাদক পর্যায়ে শক্তিশালী করে তোলার কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। পণ্য উৎপাদনের প্রকৃত ব্যয়ের সঙ্গে পণ্যের মূল্য সামঞ্জস্যপূর্ণ করার ধারণা বাস্তবে রূপ দিতে গেলে পণ্য প্রস্তুতকারীকে ন্যায্য মজুরি দেওয়ার প্রশ্ন সামনে চলে আসে। কিন্তু দুনিয়াজোড়া ন্যায্য বাণিজ্য যারা নিয়ন্ত্রণ করছে তারা আজ অবধি বিষয়টি কার্যকরভাবে বৃহত্তর বাণিজ্য দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হয়েছে অথবা তারা এটাকে চ্যারিটি দুনিয়া থেকে সচেতনভাবে বের করতে চাইছে না। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে ট্রেড নট এইড স্লোগান জনপ্রিয় হয়ে উঠলে ১৯৬৮ সালে আংকটাড ন্যায্য বাণিজ্যকে বাণিজ্য ধারণার একটি স্কুল বলে স্বীকৃতি দেয় এবং উন্নয়নশীল দুনিয়ার সঙ্গে উন্নত দুনিয়াকে ন্যায্যতার সঙ্গে বাণিজ্য করতে উৎসাহিত করে। ১৯৬৫ সালে ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা অঙ্ফাম হেল্পিং বাই সেলিং প্রোগ্রাম শুরু করে এবং সেই কর্মসূচি পরবর্তী সময় ব্রিজ প্রোগ্রাম নামে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু এতকিছু উদ্যোগ-আয়োজন সব সময়ই চ্যারিটি দুনিয়ার সীমা ছাড়িয়ে সত্যিকার প্রতিযোগিতামূলক বাণিজ্যের দুনিয়ায় টেকসই রূপ নিয়ে আত্দপ্রকাশ করতে পারেনি। ফলে ফেয়ার ট্রেডের পুঞ্জীভূত সমস্যাগুলো আশির দশকে প্রকটভাবে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছিল। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো থেকে আমদানি করা হস্তশিল্প তার বাজারমূল্য পুরাপুরি হারিয়ে ফেলেছিল। বাজার চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিত্যনতুন পণ্য নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে প্রবেশ না করে গৎবাঁধা কিছু হস্তশিল্প নিয়ে গ্যাট হয়ে বসে থাকার ফলে আশির দশকে ইউরোপে ফেয়ার ট্রেড দোকানগুলো পুঁজি-পাট্টা হারিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে। এ অবস্থায় ১৯৮৯ সালে প্রথম ফেয়ার ট্রেড কফি বাজারে আসে এবং সেটি সুপার মার্কেটে বিক্রি হতে শুরু করলে মৃতপ্রায় হস্তশিল্পনির্ভর ফেয়ার ট্রেডারদের বেঁচে থাকার অবলম্বন হয়ে ওঠে। বর্তমানে কৃষিপণ্যের বাণিজ্যে ফেয়ার ট্রেডের ঊধর্্বগতি আশাব্যঞ্জক। ফেয়ার ট্রেডের হস্তশিল্পের বাজার ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে আসছে। এক সময় তৃতীয় বিশ্ব থেকে আমদানি করা হস্তশিল্প ইউরোপের ফেয়ার ট্রেড বাজারে আশি শতাংশ বাজার দখল করেছিল। কিন্তু এখন সেটা ২৬ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। অঙ্ফাম কিংবা নরওয়ের অল্টারনেটিভ হ্যান্ডেল ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। বড় কথা পণ্য নয়, পণ্যের পেছনে কাজ করে যে মানুষগুলো তাদের গল্প বিক্রি করে দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকতে পারলেও আদতে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্রেফ গল্প বিক্রি করে সাসটেইনেবল হতে পারে না। গল্পকেন্দ্রিক দাতব্যের অংশ হিসেবে পণ্য বিক্রির কেচ্ছা পুরাপুরি তলানিতে ঠেকার পর ১৯৮৮ সালে নেদারল্যান্ডের ম্যাক্স হ্যাভেলার ফেয়ার ট্রেড পণ্যের গায়ে লেবেলিং করতে শুরু করে। পণ্যের গায়ে লেবেলিং শুরু হওয়ার পর সার্টিফাইড কফি ওয়ার্ল্ডশপের বাইরে সুপার মার্কেটগুলোতে ভালো বিক্রি হচ্ছে। লেবেলিং সিস্টেম চালু করার ফলে ভোক্তা এখন বিশ্বাস করে সাপ্লাই চেইনের শেষ প্রান্তে থাকা উৎপাদক তার ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে। ম্যাক্স হ্যাভেলারের পর জার্মানির ফ্লো-শার্ট থেকে শুরু করে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান সার্টিফিকেশনের কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে ফেয়ার ট্রেড সার্টিফাইড পণ্যের বিক্রি মূল্য ৩.৬২ বিলিয়ন ডলার। প্রতি বছর এই বাজার ৪৭ ভাগ হারে বাড়ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দশটি ন্যায়-নীতি নিয়ে ফেয়ার ট্রেড যাত্রা শুরু করেছিল। খুব সংক্ষেপে বললে বলা যায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা তাদের প্রথম নীতি। স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা, উৎপাদকের ন্যায্যমূল্য, কাজের ভালো পরিবেশ, নারী-পুরুষের সমতা, পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিয়ে ফেয়ার ট্রেড প্রোমোট করা এবং কোম্পানি এবং উৎপাদকের সক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফেয়ার ট্রেড এই বাংলাদেশেই প্রায় পাঁচ দশক ধরে পথ চলছে। অথচ এসব নীতি-আদর্শের কোনটি কোন পর্যায়ে কিভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে সেটা সাধারণ মানুষ কিছুই জানে না। তাজরিন ফ্যাশন কিংবা রানা প্লাজা ধসের পর ন্যায্য বাণিজ্যের অভিভাবকরা দুর্ঘটনাগুলোকে পুঁজি করে সোচ্চার কণ্ঠে নেতিবাচক প্রচার প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের পোশাকশিল্প খাতে ফেয়ার ট্রেডের ১০ নীতি বাস্তবায়ন করার কোনো উদ্যোগ তারা কখনো নিয়েছে বলে দেখা যায় না। ফেয়ার ট্রেড শব্দটি পোশাকশিল্প খাতে পরিচিত করার কোনো উদ্যোগ তারা কখনো নিয়েছে বলে আমার জানা নেই। রানা প্লাজা ধসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় কিছু ফেয়ার ট্রেডার কথামালা সাজিয়ে দাতব্য বাণিজ্য করেছে, তবে তাদের কেউ পোশাক খাতে ফেয়ার ট্রেডের ১০ নীতি কার্যকর জন্য এতটুকু অবদান রাখার চেষ্টা করেনি। স্রেফ ফেয়ার ট্রেডের ১০ নীতি পোশাক খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানোর কোনো উদ্যোগ নিয়েছে বলে আমি দেখেনি। ওয়ার্ল্ড ফেয়ার ট্রেড অর্গানাইজেশন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ফেয়ার ট্রেড অর্গানাইজেশনের কোনো কর্তাব্যক্তি অথবা তাদের এ দেশীয় এজেন্টদের কেউ কখনো বিজিএমইর নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর কোনো পরামর্শ দিয়েছে বলে শুনিনি। অথচ রানা প্লাজা ধসে পড়ার পরদিন থেকে বিশ্ব ন্যায্য বাণিজ্য সংস্থা তাদের ওয়েব পেজে রানা প্লাজার ধ্বংসাবশেষের ছবি ঝুলিয়ে রেখেছে। ন্যায্য বাণিজ্যের ধারণা পৃথিবীতে বেশ পুরনো হলেও বাংলাদেশে খুব অল্প মানুষই বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। আমাদের দেশে গুটিকয়েক কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কোনো এক অজানা কারণে দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কাছে ন্যায্য বাণিজ্য শব্দটি আজও অচেনা রয়ে গেছে। ব্যাপক জনগোষ্ঠী অনেক দূরের কথা, দেশের ব্যবসায়ী সমাজের প্রায় সবাই আজও ন্যায্য বাণিজ্য শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নয়। অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই ন্যায্য বাণিজ্যের ধারণাকে পুঁজি করে গুটিকয়েক কোম্পানি এখানে মোটামুটি ভালোই ব্যবসা করছে। এই কোম্পানিগুলোর একটি নেটওয়ার্কিং সংগঠনও আছে। এতকিছুর উপস্থিতি সত্ত্বেও বাংলাদেশে চার দশক ধরে ন্যায্য বাণিজ্যের ধারণা ব্যবসায়ী সমাজ এবং সাধারণ মানুষের অজানা থাকার বিষয়টি দুঃখজনক।

লেখক : কথাসাহিত্যিক।

 

 

সর্বশেষ খবর