শুক্রবার, ২৯ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
ধর্ম

ফজিলতময় শাবান মাস

মুফতি মুতীউর রাহমান

রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে মুসলিম উম্মাহর দুয়ারে কড়া নাড়ল মাহে শাবান। সর্বশ্রেষ্ঠ মাস রমজানের আগাম প্রস্তুতির তাগাদা নিয়ে এলো মহিমান্বিত শাবান। শবে বরাত উপহার নিয়ে এলো বরকতময় মাস শাবান। খোদ শাবান মাসটিও বিভিন্ন বিবেচনায় গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ। শাবান মাস পবিত্র রমজানের প্রস্তুতি পর্ব। হজরত মুহাম্মদ (সা.) শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতেন। রজব ও শাবানে তিনি রমজানের অধীর অপেক্ষায় থাকতেন। রমজানের আগমনের জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রসুল (সা.) শাবান মাসের (দিন তারিখের হিসাবের) প্রতি এত অধিক লক্ষ্য রাখতেন যা অন্য মাসের ক্ষেত্রে রাখতেন না। (আবু দাউদ ১/২১৮)।

উম্মতকেও তিনি শাবান মাসের দিন তারিখের হিসাব রাখার গুরুত্বারোপ করেছেন। এ মাসে অধিক হারে নফল রোজা রাখা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। হজরত উম্মে সালমা (রা.) বলেন, আমি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে শাবান ও রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-কে শাবান মাসের মতো এত অধিক (নফল) রোজা আর অন্য কোনো মাসে রাখতে দেখিনি। এ মাসের অল্প কয়েক দিন ছাড়া বরং বলতে গেলে সারা মাসই তিনি রোজা রাখতেন। (তিরমিজি ১/১৫৫)

শাবান মাসের অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি রাত হচ্ছে শবে বরাত। হাদিসে এ রাতের ফজিলতের বিস্তারিত আলোচনা এসেছে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেন, পনের শাবান রাতে (শবে বরাত) তোমরা জেগে থেকে ইবাদত কর। আর পরদিন রোজা রাখ। (মিশতাক ১১৫)। হাদিসে আছে হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রতি (আরবি) মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ এই তিন দিন রোজা রাখতেন। সে হিসাবে শবে বরাতের আগের দিন পরের দিন এবং এর পরের দিন মোট তিন দিন নফল রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। তবে কারও যদি গত রমজানের রোজা কাজা থাকে তাহলে এই শাবানেই তা আদায় করে ফেলা অতি জরুরি। মহিলাদের তো রমজানের রোজা কাজা হতেই পারে। তারা যদি এখনো তা আদায় না করে থাকেন তাহলে শাবানে নফল রোজা না রেখে কাজা রোজাগুলো রেখে ফেলতেই হবে। সর্বোপরি শাবান মাসে রমজানের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নিতে হবে। যাতে রমজানের কাঙ্ক্ষিত ফজিলত লাভে আমরা ধন্য হতে পারি।

লেখক : খতিব, মুহাম্মদিয়া দারুল উলুম জামে মসজিদ, পশ্চিম রামপুরা, ঢাকা।

 

সর্বশেষ খবর