শনিবার, ৩০ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

গডফাদার সমাচার

ক্ষমতাদর্পীদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নিন

আওয়ামী লীগের প্রতিটি শাসনামল যে সাধারণ মানুষের কল্যাণে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে তা একটি ধ্রুব সত্য। এ সত্যের পাশাপাশি আরেকটি সত্য হলো দলের কিছু কাণ্ডজ্ঞানহীন নেতা-কর্মীর কারণে সে সুকীর্তির ফসল তারা বহু ক্ষেত্রেই ঘরে ওঠাতে পারেনি। দলের মধ্যে গজিয়ে ওঠা গডফাদাররা সব সুকীর্তিকে গিলে খেয়েছে। এক বালতি দুধে এক ফোঁটা চোনা পড়লে তা যেমন নষ্ট হয়ে যায় তেমনি গডফাদারদের বেপরোয়া কার্যকলাপ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সময়ের আকাশছোঁয়া সাফল্যকেও নিষ্প্রভ করেছে। স্বাধীনতার পর শূন্য থেকে যাত্রা শুরু করেছিল স্বাধীন বাংলাদেশ। চারদিকে ছিল নেই আর নেই। সে অবস্থায় বঙ্গবন্ধু সরকার রূপকথার ফিনিঙ্ পাখির মতো ভস্ম থেকে উড়াল দেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। দেশের ইতিহাসের এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে তার আমলে। যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রায় সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি দেশের পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু যে সাফল্য দেখিয়েছেন তা সত্যিকার অর্থেই নজিরবিহীন। তার পরও সত্য যে সেই আমলেও কিছু অর্বাচীনের ক্ষমতার অপচর্চার কারণে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে শুদ্ধতম সরকারকেও সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ১৯৯৬-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার দ্রব্যসামগ্রী মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা, ফারাক্কার পানিবণ্টনসহ নানা বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য রেখেছে। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর কৃতিত্ব দেখিয়েছে তারা। তার পরও কয়েকজন এমপি এবং ক্ষমতাদর্পী নেতার কারণে সে সরকারের সাফল্যগুলো নিষ্প্রভ হয়েছে জনমনে। ১৯৭৫-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা নিয়ে ক্ষমতায় আসা ২০০৮ সালের সরকারকেও বিব্রত হতে হয়েছে একই কারণে। গডফাদারমনস্ক ক্ষমতাদর্পী এমপি ও নেতাদের সম্পর্কে বর্তমান সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করায় ক্ষমতা অপচর্চাকারীদের থাবা নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকলেও তা যে থেমে নেই তা এক বাস্তবতা। আমরা আশা করব, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হওয়ার মানসিকতা নিয়ে ক্ষমতাদর্পীদের শক্ত হাতে মোকাবিলা করা হবে। সরকারের সুনামকে যারা গিলে খেতে চায় পরিচয় যাই হোক, তাদের সামাল দেওয়া সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। নিজেদের স্বার্থেই এ ব্যাপারে আপসহীন মনোভাবের পরিচয় দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর