শনিবার, ৩০ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

ইমিগ্রেশন হয়রানি

সভ্য দুনিয়ায় যা অকল্পনীয়

দুনিয়ার সব সভ্য দেশের নৌ, বিমান ও স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশনে যাত্রী হয়রানির বিষয়টি অকল্পনীয়। ইমিগ্রেশনে যারা দায়িত্ব পালন করেন তাদের বেতন-ভাতা আসে জনগণের ট্যাক্সে টাকা থেকে। সে ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তারা দেশের মালিক-মোক্তারদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করবেন এটি কারও কল্পনায়ও আসে না। আমরা নিজেদের সভ্য দেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করি। দুনিয়ার যেসব দেশ দ্রুত উন্নতি লাভ করছে সেসব দেশের একটি হিসেবে আমাদের গর্বের শেষ নেই। তবে মানসিকভাবে সভ্য-ভব্য হওয়া, সুআচরণের পরিচয় দেওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমাদের দেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ঘাটতি আছে বলে প্রায়শ অভিযোগ করা হয়। এ অভিযোগ সবচেয়ে বেশি দেশের নৌ, বিমান ও স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমিগ্রেশন পুলিশের একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড, যাত্রীদের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্য, যে কোনো ছুতায় হয়রানির প্রবণতা বিদেশগামী ও দেশে ফেরত মানুষ দুঃসহ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ইমিগ্রেশনের একশ্রেণির কর্মকর্তা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না তুলেই যাত্রীদের পাসপোর্ট আটক করে পাঠিয়ে দেন এসবির প্রধান কার্যালয়ে। যাত্রীর পাসপোর্ট বা ভিসায় কী গলদ রয়েছে, সে কথাটিও উল্লেখ করা হয় না নোটিসের ফরমটিতে। কোনো কৈফিয়ত ও জবাবদিহিতা ছাড়াই যে কারও পাসপোর্ট আটক করে তার বিদেশযাত্রায় বাধা দেওয়া তাদের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ ও বিভিন্ন এয়ারলাইনস এজেন্টের সমন্বয়ে চলে অভিনব প্রতারণা। এয়ারলাইনসের প্রতিনিধিরা টিকিটধারী যাত্রীকেও বোর্ডিং পাস দেওয়ার ক্ষেত্রে টালবাহানা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নানা অজুহাতে বোর্ডিং পাস আটকে দেন তারা। বাধ্য হয়ে বিদেশগামী যাত্রীরা বিমানযাত্রা বাতিলের ভয়ে উৎকোচ দিয়ে বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করেন। এর অন্যথা হলে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর পক্ষে বিমানে ওঠা সম্ভব হয় না। দেশের যে ৮০ লাখ মানুষ বিদেশে শ্রম বিক্রি করে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখছে ইমিগ্রেশনে তারাই নাজেহাল হয় সবচেয়ে বেশি। বিদেশ থেকে ফেরার সময় আপনজনদের জন্য আনা জিনিসপত্রের একাংশ কেড়ে নেওয়া হয় এমন ঘটনা ওপেন সিক্রেট। হয়রানি বন্ধে দেশপ্রেমিক এবং দায়িত্বশীলদেরই কেবল ইমিগ্রেশনে নিয়োগ

করা উচিত। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখলেই ভালো করবেন।

 

 

সর্বশেষ খবর