রবিবার, ৩১ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

খাদ্যে ভেজাল

জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি

ভেজালবিরোধী অভিযান বন্ধ থাকায় রাজধানীসহ সারা দেশে ভেজালকারীদের দৌরাত্ম্য আবারও শুরু হয়েছে। ফরমালিন রোধের সরকারি উদ্যোগ অনেকাংশে সফল হলেও ভেজালের অন্যান্য ক্ষেত্রে সুফলের দেখা নেই বললেই চলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝে-মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে দুই-একটি ভেজালবিরোধী অভিযান চালালেও তা ভেজালকারীদের মনে ভয় ঢুকাতে পারছে না। দুষ্প্রাপ্যতার কারণে ফরমালিনের ব্যবহার আপাতত সীমিত হয়ে পড়লেও বিভিন্ন ফল পাকাতে ব্যবহার করা হচ্ছে কার্বাইড। ভেজালকারীদের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব সত্ত্বেও খাদ্যপণ্যে ভেজাল জনস্বাস্থ্যের জন্য এ মুহূর্তে এক নম্বর হুমকি হিসেবে বিবেচিত। খাদ্যে ভেজাল বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও সামাজিক সচেতনতার অভাবে তা কোনো কাজে আসছে না। খাদ্যে ভেজাল এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, কোনো সচেতন মানুষের পক্ষে কোনো খাদ্যই স্বস্তির সঙ্গে খাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বাজারে যেসব জুস ও পানীয় বিক্রি হয় তার সিংহ ভাগই মানসম্মত নয়। নামিদামি কোম্পানির তৈরি করা মিষ্টি কতটা স্বাস্থ্যসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বাজারে যে ঘি, বাটার অয়েল ও ভোজ্যতেল বিক্রি হয় তার সিংহ ভাগই নকল-ভেজাল। শিশুখাদ্যের মানও এখন প্রশ্নবিদ্ধ। দুধে ভেজালের রাজত্ব বিরাজ করছে যুগ যুগ ধরে। এখন যেসব প্যাকেটজাত দুধ বিক্রি হয় তার বেশির ভাগই মানসম্মত নয়। আম, কলা, আপেল, খেজুর ইত্যাদি ফল খেতে ভয় পায় এমন মানুষের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো ফল পুষ্টির বদলে মানুষকে আরও রোগাক্রান্ত করছে। আমরা বারবার এ কলামে বলেছি, খাদ্যে নকল-ভেজাল বন্ধে সরকারি উদ্যোগ বা মোবাইল কোর্টের অভিযান যেমন অব্যাহত রাখতে হবে তেমনি এ জন্য গড়ে তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন। প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠলে এ আপদ থেকে সহজেই নিস্তার পাওয়া যাবে। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। মানুষের জীবন নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলছে তারা দেশ ও জাতির শত্রু। জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত এ আপদের বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপের বিকল্প নেই।

 

সর্বশেষ খবর