মঙ্গলবার, ৩০ জুন, ২০১৫ ০০:০০ টা

জালনোটের টাঁকশাল!

জালিয়াতরা যেন রেহাই না পায়

রাজধানীর বনশ্রীতে র্যাব সদস্যরা রীতিমতো জালনোটের এক টাঁকশাল আবিষ্কার করেছে। এ টাঁকশাল থেকে তারা ১ কোটি ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের জালনোট আটক করেছে। এ সময় জালনোট তৈরির সরঞ্জামসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। দু'সপ্তাহ আগে চলতি মাসের ১৩ জুন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের একটি বাসা থেকে ৪০ লাখ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামসহ ছয়জনকে আটক করে। আটক জালিয়াতরা স্বীকার করেছে ঈদ উপলক্ষে বেচাকেনা বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা জালনোট তৈরি করে তা বাজারে চালাতে চেয়েছিল। জালনোট তৈরির দায়ে জালিয়াত চক্রের সদস্যদের প্রায়ই ধরা হয়, কিন্তু আইনের ফাঁক গলিয়ে তারা যেমন মুক্তি পায় এবং আবারও জড়িত হয় জালিয়াতি ব্যবসায়। জালনোট চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হলেও মামলার দুর্বলতায় জালনোট চক্রের সদস্যরা সহজেই জামিন পেয়ে যায়। পুলিশ এ ব্যাপারে যাদের সাক্ষী করে প্রায়শই তাদের খোঁজ পাওয়া যায় না, ফলে মামলার নিষ্পত্তি অসম্ভব হয়ে পড়ে। জালনোট প্রতিরোধে ২০১১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে আইন মন্ত্রণালয়ে বেশ কিছু সুপারিশ পাঠায়। এতে জাল মুদ্রা তৈরির সরঞ্জাম বা বড় চালানসহ গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের জামিন অযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা এবং দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের সুপারিশ করা হয়েছিল। এ ছাড়া জালনোট ব্যবসায় জড়িতদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমেও শাস্তি দেওয়ার প্রস্তাব ছিল। আমাদের বিশ্বাস, এ সুপারিশ কার্যকর হলে জালনোটের দৌরাত্দ্য কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। স্মর্তব্য, জালনোট ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান ছিল। ১৯৮৭ সালে এরশাদ শাসনামলে সে বিধান রহিত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড করা হয়। মৃত্যুদণ্ডের পুনঃপ্রবর্তন না হোক, এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জামিন অযোগ্য করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও আর্থিক জরিমানা সংবলিত নতুন আইন প্রণয়ন করা হবে, আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

সর্বশেষ খবর