বুধবার, ১ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
ভেষজ

অশ্বগন্ধা

অশ্বগন্ধা

অশ্বগন্ধা একটি ছোট, শক্ত কাঁটাবিশিষ্ট, খাড়া ও শাখা-প্রশাখা গাছ। এর পাতাগুলো দেখতে অনেকটা খচ্চরের কানের মতো। বিপরীত দিকে ৮.১২ সে.মি. দীর্ঘ হয়। ঝোপ ঝাড় ও উচ্চতায় এবং কাণ্ডের গঠনে অনেকটা বেগুন গাছের মতো। পাতা ও ডাঁটার গায়ে সূক্ষ্ম লোম আছে। বীজগুলো বেগুনের মতো ও লালচে বর্ণের হয়। গাছটিতে ছোট ছোট ফুল ধরে। বাংলাদেশের মতো নীতিশীতোষ্ণ দেশসমূহে জন্মালেও গ্রীষ্মপ্রধান দেশেই এর বৃদ্ধি বেশি। রাসায়নিক উপাদান : এলকালয়েড ও স্টেরইডাল লেকটনস অশ্বগন্ধার প্রধান উপাদান। তা ছাড়া এতে আছে উইথেনাইন, সোমনিফেরিন, সোমনাইন, সোমনিফেরিনিন, এডাপটোজেন, উথেনিনিন, সিউডো ট্রপিন, সিউডো উথেনিন ট্রপিন, কোলাইন, এনাফেরিন, এনাহাইড্রিন, ফ্যাটি এসিড, অ্যামাইনো এসিড ও নানা রকম চিনি। অশ্বগন্ধার পাতায় আছে স্টেরয়ডাল লেকটন সেটা সাধারণভাবে উইথেনোলিডস। এন্টিবায়োটিক ও এন্টি-টিউমার কার্যকারিতা থাকায় অশ্বগন্ধার উপাদান উইথোকোরিন বেশ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে অশ্বগন্ধার ব্যবহার : প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে অশ্বগন্ধার ব্যবহার হয়ে আসছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে অশ্বগন্ধা ট্র্যাডিশনাল হার্বস হিসেবে ব্যাপক ব্যবহার হয়ে আসছে বলে জানা যায়। এ পর্যন্ত অশ্বগন্ধা নিয়ে দুশ'র অধিক গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। এসব গবেষণায় পাওয়া তথ্য মতে যেসব ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার কার্যকারিতা পাওয়া যায় তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি তুলে ধরা হলো।

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ২. শক্তি, সামর্থ্য ও জীবনীশক্তি বৃদ্ধি করে, ৩. মানসিক উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও অবসাদ দূর করে, ৪. বুদ্ধি, স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে, ৫. ব্রেইন সেল ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে, ৬. শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করে, ৭. ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখে, ৮. হেপাটিক গ্লাইকোজেন ও হিমোগ্লোবিন লেভেল বৃদ্ধি করে, ৯. অকাল বার্ধক্য রোধে ভূমিকা রাখে, ১০. হাঁপানি, অ্যালার্জি এবং কফে কাজ করে, ১১. যৌনশক্তি বর্ধক, ১২. হরমোন বৃদ্ধি করে, ১৩. Amcrican journal of Drug Alcohol Abuse প্রকাশিত নিবন্ধে জানা যায়, অশ্বগন্ধা মদপানের আসক্তি কমায়, ১৪. কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, ১৫. মূত্রবর্ধক, ১৬. কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা যায় অশ্বগন্ধা ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

ডা. আলমগীর মতি

 

সর্বশেষ খবর