বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

কর্ণফুলীর তলে সুড়ঙ্গ পথ

চট্টগ্রাম হবে বাংলাদেশের সাংহাই

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে তৈরি হবে বহু লেনবিশিষ্ট সুড়ঙ্গ পথ। চার কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ পথ তৈরিতে গত মঙ্গলবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে সে দেশের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের চুক্তিও হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দেশের প্রথম এ সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণে ব্যয় হবে ৭০৫ মিলিয়ন ডলার। বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর কাফকো-পতেঙ্গা পয়েন্টে সুড়ঙ্গ পথটি নদীর পশ্চিম পাশে নেভাল গেট পয়েন্ট থেকে নদীর ১৫০ ফুট নিচ দিয়ে অন্য পাশে গিয়ে উঠবে এবং দক্ষিণ পাড় থেকে সংযোগ সড়ক দিয়ে বাঁশখালী সড়কে মিশবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম মূল শহরের সঙ্গে কর্ণফুলী নদীর অন্য প্রান্তের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। প্রায় চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণ ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের দূরত্ব এবং যাতায়াতের সময়ও কমাবে। এর কল্যাণে কর্ণফুলী নদীর অপর প্রান্তে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা যেমন গড়ে উঠবে তেমনি পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাবে। চীনের বৃহত্তম নগরী সাংহাইর আদলে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম হবে 'বাংলাদেশের সাংহাই'। স্মর্তব্য, চীনের সাংহাই নগরী ওয়াংপু নদীর তীরে অবস্থিত। এ নদীর দুই তীর ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে সাংহাই সিটি। এ মহানগরীর দুটি অংশ। একটির নাম পুডং, অপরটির নাম পুশি। চট্টগ্রামকে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতেই কর্ণফুলীর তলদেশে সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে নগরীর উত্তরাংশের জনসংখ্যার ক্রমবৃদ্ধির চাপ কমবে। আগামী ডিসেম্বরে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে তা শেষ হবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। নেভাল একাডেমি থেকে কাফকো পর্যন্ত সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণ হলে নগরীর পরিবেশ, প্রতিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাণিজ্যিক রাজনীতি হিসেবে চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠা আরও সুসংহত হবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে চট্টগ্রামের উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কর্ণফুলীর নিচে বহুতলবিশিষ্ট সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণও ছিল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ। এটি বাস্তবায়িত হলে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একটি বড় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

 

সর্বশেষ খবর