শুক্রবার, ৩ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

মধ্য আয়ের দেশ বাংলাদেশ

এ এক গৌরবজনক উত্থান

বাংলাদেশ এখন মধ্য আয়ের দেশ। বিশ্বব্যাংক বুধবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের তালিকায় রাখা হয়েছে। প্রতি বছর ১ জুলাই বিশ্বব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে মাথাপিছু জাতীয় আয় অনুসারে বিশ্বের দেশগুলোকে চারটি আয় গ্রুপে ভাগ করে। মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৪৫ ডলার বা তার নিচে হলে সেসব দেশকে রাখা হয় নিম্নআয়ের দেশের গ্রুপে। ১ হাজার ৪৬ ডলার থেকে শুরু করে ১২ হাজার ৭৩৬ ডলার পর্যন্ত দেশগুলোকে বলা হয় মধ্য আয়ের দেশ। মধ্য আয়ের দেশগুলো আবার দুটি গ্রুপে বিভক্ত। ১ হাজার ৪৬ ডলার থেকে শুরু করে ৪ হাজার ১২৫ ডলার পর্যন্ত নিম্নমধ্য আয়ের দেশ, ৪ হাজার ১২৬ ডলার থেকে শুরু করে ১২ হাজার ৭৩৬ ডলার যে সব দেশের গড় আয় তারা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এর চেয়ে বেশি আয়ের দেশগুলো উচ্চ আয়ের দেশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় ছিল ১ হাজার ৩১৪ ডলার। মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৪৫ ডলারকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাংকের পদ্ধতি অনুযায়ী নতুন তালিকায় মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। স্মর্তব্য, সরকারের ঘোষিত পরিকল্পনায় ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার কথা ছিল। তার আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার কৃতিত্ব দেখাল বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংকের নতুন তালিকায় চারটি দেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এ চারটি দেশ হলো- বাংলাদেশ, কেনিয়া, মিয়ানমার ও তাজিকিস্তান। সার্কভুক্ত ভারত ও পাকিস্তান নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিবেচিত। সব মিলিয়ে এখন নিম্ন আয়ের দেশ ৩১টি, নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ ৫১টি, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ ৫৩টি এবং উচ্চ আয়ের দেশ ৮০টি। মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া বাংলাদেশের জন্য এক অনন্য গৌরবের ঘটনা। স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশ ছিল নিম্ন আয়ের গ্রুপে। প্রথম তিন দশকে বাংলাদেশ ছিল নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যেও নিম্ন পর্যায়ে। মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হলেও উচ্চ মধ্যম আয়ের শীর্ষ দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের গড় জাতীয় আয়ের পার্থক্য এখনো আকাশ-পাতাল। উচ্চ আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার আগে এ ব্যবধান ঘুচাতে বাংলাদেশকে লড়তে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সংগ্রামে আরও যত্নবান হতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর