শনিবার, ৪ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

প্রতারণার ফাঁদ চারদিকে

ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ

বাংলাদেশকে প্রতারকদের অভয়ারণ্য বললেও বোধহয় খুব একটা বেশি বলা হবে না। এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে প্রতারকদের পদচারণা নেই। বাংলাদেশ প্রতিদিনের 'ঘাটে ঘাটে প্রতারণা' শীর্ষক শীর্ষ প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তাতে উপলব্ধি করা যায় কী অবস্থায় আছে দেশের ১৬ কোটি মানুষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতারণা ইদানীং ব্যক্তি ও পরিবার থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও ডালপালা গজিয়ে তুলেছে। প্রতারণার জাল বিছিয়ে বিভিন্ন চক্র হাজারো মানুষকে সর্বস্বান্ত করছে। ঈদ সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রতারকরা। ডিজিটাল জীবন ব্যবস্থাপনায় 'প্রতারণাও' ডিজিটাল রূপ পেতে শুরু করেছে। এখন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড যেমন জালিয়াতি করে যে কারও অ্যাকাউন্ট খালি করা হচ্ছে, তেমনি বিদেশ থেকে ভুয়া ওয়ার্কিং পারমিট সংগ্রহ, নিয়োগপত্র তৈরি, মোবাইলে লাখ লাখ টাকা লটারি পাওয়ার প্রলোভনযুক্ত মেসেজ বানিয়েও প্রতারণা চলছে হরদম। 'একদর'-এর দোকানে ঢুকে দেখা যায় পণ্যের গায়ে দাম লাগানো স্টিকার ঝুলছে। সরল মনে দরদাম না করে যারা জিনিসপত্র কিনেছে তারা কখনো কখনো বাইরে এসে অন্য দোকানে যাচাই করে জানতে পারছে জিনিসগুলোর প্রকৃত দাম অর্ধেকেরও কম। অনলাইন মার্কেটের নামে কম দামে জিনিসপত্র কেনাবেচার লোভনীয় অফারের সুযোগ নিতে গিয়েও অনেকে খেসারত দিচ্ছেন। দেশে পুলিশ-র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন বাহিনী থাকা সত্ত্বেও প্রতারকদের দাপট কিছুতেই কমছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কোনো অসৎ সদস্যের সঙ্গে প্রতারকদের দহরম মহরম থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে গেলে প্রতিবাদকারীকেই ভুগতে হয়। প্রতারকদের মাঝে মধ্যে গ্রেফতার করা হলেও আইনের ফাঁক গলিয়ে তারা ছাড়া পায় নির্বিবাদে। তাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা দায়ের করা হয় সেগুলোতে থাকে শুভঙ্করের ফাঁকি। আইন প্রয়োগকারীদের সঙ্গে আটককৃত প্রতারকদের সমঝোতায় তাদের আটক রাখা কিংবা শাস্তির সম্মুখীন করা কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলে প্রতারকদের দাপটই শুধু বাড়ছে না, আইনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হচ্ছে। এ অকাম্য আস্থার অবসানে প্রতারকদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবশ্যই কঠোর হতে হবে।

সর্বশেষ খবর