রবিবার, ৫ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

ভুয়া অভিযোগে গ্রেফতার

দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি কাম্য

সেই মধ্যযুগে বাংলাদেশে দেখা দিয়েছিল 'মৎস্যন্যায়' অবস্থা। যা ইচ্ছে তাই করার অপচর্চায় মেতে উঠেছিল সামাজিক শক্তির কুশীলবরা। ইতিহাসের এ অধ্যায়কে মৎস্যন্যায় যুগ হিসেবে অভিহিত করা হয়। বাঙালির ইতিহাসে যা কলঙ্ক হিসেবে আখ্যায়িত। কালের বিবর্তনে বাংলাদেশ এখন স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। দারিদ্র্যপীড়িত এ দেশটি নিম্ন আয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে আপন মহিমায়। বিশ্বসেরা অর্থনীতিবিদরা স্বীকার করেছেন বিশ্বের অন্যতম সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দেশ হিসেবেও বাংলাদেশ পরিগণিত হতে চলেছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা এবং নানা দিক থেকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া বিশ্ব সমাজের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে সমালোচিত হচ্ছে আইনের শাসন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাদের দায়িত্ব সেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু দুর্বিনীত সদস্যের কর্মকাণ্ড শুধু সংশ্লিষ্ট বাহিনী নয়, জাতির হাজার বছরের সব সাফল্যকেও কলঙ্কিত করছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে ফজলুল হক রহিম নামের এক ব্যবসায়ীকে ভুয়া অভিযোগে ডিবি পরিচয়ে গ্রেফতার এবং তার কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ আদায়ের পর জামিনে মুক্তিদান এবং পরবর্তীতে তার আবারও নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ হয়েছে। বলা হয়েছে, মিরপুরে কল্যাণপুর এলাকার ওই ব্যবসায়ী তাকে গ্রেফতার, নির্যাতন এবং ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় সম্পর্কে মানবাধিকার কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে আবেদন করার পর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ডিবি পুলিশের দুই উপ-প্রদর্শকের দিকেও সন্দেহের তীর ছোড়া হয়েছে নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রীর পক্ষ থেকে। আইনের শাসন কায়েমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা অপরিসীম। তার বদলে তারা নিজেরাই তস্করের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে তা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যের জন্য সরকারের সুনাম কলঙ্কিত করা ঠিক হবে কিনা তা সরকারকেই ভেবে দেখতে হবে। ফজলুল হক রহিমের নিখোঁজ হওয়ার পেছনে যারাই জড়িত হোক তাদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

 

 

 

সর্বশেষ খবর