শনিবার, ১১ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

ঘুষ-দুর্নীতি ও সাংঘর্ষিক রাজনীতি

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান অন্তরায়

যুক্তরাজ্যের মতে বাংলাদেশের ব্যবসায় প্রধান সমস্যা ঘুষ ও সাংঘর্ষিক রাজনীতি। রাজনীতিবিদ, আমলা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈষম্যমূলক ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করাকেও তারা বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় ঝুঁকি বলে অভিহিত করেছে। ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে সাতটি উপশিরোনামে ঝুঁকিগুলো তুলে ধরা হয়। ঘুষ-দুর্নীতি বাংলাদেশকে যে পিছিয়ে রাখছে এটি দিবালোকের মতো সত্য! বাংলাদেশের অভ্যুদয়সহ এ দেশের সব মহান অর্জনে রাজনীতিকদের অবদান অসামান্য হলেও কালের বিবর্তনে দেশে আজ যে রাজনীতি থাবা বিস্তার করছে তার সঙ্গে ঐতিহ্যের যোগসূত্র নেই বললেই চলে। কল্পকথার ভূতেরা যেমন পেছনের পানে হাঁটে তেমন সাংঘর্ষিক রাজনীতি জাতিকে পিছিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, লাল ফিতার দৌরাত্দ্য। যুক্তরাজ্যের প্রতিবেদনে এ বিষয়টির প্রতি সরাসরি আলোকপাত করা না হলেও ঘুষ-দুর্নীতি আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কার্যত একই মুদ্রার দুই পিঠ। ঘুষ-দুর্নীতির কারণেই লাল ফিতার দৌরাত্দ্য অপছায়া বিস্তার করছে সরকারি প্রতিটি দফতরে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত সমস্যাকে প্রায়শ চিহ্নিত করা হয়। এ সমস্যার সমাধানে সরকারের মধ্যে সদিচ্ছারও ঘাটতি নেই। কিন্তু সাধ ও সাধ্যের বৈপরীত্য সে সদিচ্ছা পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাস্তব বিবেচনায়ও অবকাঠামো সমস্যা একটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু ঘুষ-দুর্নীতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দূর করার জন্য কোনো আলাদিনের চেরাগের প্রয়োজন পড়ে না। এ জন্য দরকার সদিচ্ছা। দরকার প্রত্যয়ী ভূমিকা। সে ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় পরিশ্রমী মানুষের দেশ বাংলাদেশের যতটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ততটা যেতে পারছে না। দেশকে দ্রুত নিম্নমধ্য আয়ের দেশ থেকে উচ্চমধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে এ ব্যাপারে সরকারকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভূমিকা পালন করতেই হবে।

সর্বশেষ খবর