বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

এ পি জে আবদুল কালাম

মানুষের মতো মানুষ অভিধার যোগ্য যিনি

স্বনামখ্যাত শিক্ষাবিদ, প্রথিতযশা পরমাণু বিজ্ঞানী- ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম আর নেই। সোমবার ৮৪ বছর বয়সে এই মহীরুহ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। ভারতের পরমাণু গবেষণার জনক হিসেবে ভাবা হয় এই কৃতী বিজ্ঞানীকে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জন-অধ্যুষিত দেশ ভারতকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি। দেশের মহাশূন্য গবেষণায় তার অবদানও ছিল সবার শীর্ষে। পরবর্তীতে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের প্রবক্তা হিসেবেও আবর্ভূত হন তিনি। মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে তিনি এসেছিলেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্মারক বক্তব্য রাখতে। বক্তব্য দেওয়া অবস্থায় হঠাৎ তিনি পড়ে যান। তাকে সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আবদুল কালামের জন্ম ভারতের তামিলনাড়ুর রামেশ্বরম শহরে, ১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর। মৎস্যজীবী পরিবারের সন্তান ছোটবেলা থেকেই বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। পড়াশোনা চালানোর জন্য সেই শিশু বয়সে পত্রিকার হকারি শুরু করেন। মেধাবী এ শিশুটি পরবর্তীতে রকেট বিজ্ঞানী হিসেবে আত্দপ্রকাশ করেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তান এ পি জে আবদুল কালাম, দেশের শীর্ষ মহাশূন্য বিজ্ঞানী, পরমাণু বিজ্ঞানী, কৃতী শিক্ষাবিদ ও রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থেকে প্রমাণ করেছেন স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয়ী মনোভাব থাকলে তুচ্ছ অবস্থা থেকে মহীরুহে পরিণত হওয়া সম্ভব। নানা ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কৃতিত্বের অধিকারী আবদুল কালাম ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন সাদাসিধা জীবনযাপনে অভ্যস্ত। বাংলাদেশের স্থান ছিল তার হৃদয়ের কোমল স্থানে। একাধিকবার বাংলাদেশ সফরে এসেছেন তিনি। বাংলাদেশের নদী তাকে আকর্ষণ করত। এ দেশের পোশাক শিল্পের অসামান্য বিকাশের প্রশংসা করেছেন অকপটে। ভারতরত্ন এ পি জে আবদুল কালামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সে দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ দল-মত-নির্বিশেষে সব মানুষ। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ বুদ্ধিবৃত্তির সঙ্গে জড়িতরা দেশের এই সুহৃদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মানুষের মতো মানুষ অভিধায় অভিহিত হওয়ার যোগ্যতা যারা রাখেন ভারতের প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি ছিলেন তাদেরই একজন। তাকে আমাদের অন্তিম অভিবাদন।

 

সর্বশেষ খবর